মুখের যত্নের জন্য আপনার যা জানা উচিত

মুখের যত্নের জন্য আপনার যা জানা উচিত
মুখের যত্নের জন্য আপনার যা জানা উচিত

আজ আমরা এখানে সঠিক ভাবে মুখের যত্নের জন্য আপনার যা জানা উচিত সেই সব কিছু নিয়ে জানবো। মুখের অযত্নে আপনার সৌন্দর্যের কোন সমস্যা হতে পারে। সেই কারণে মুখের যত্নের জন্য আপনার যা জানা উচিত সেই কৌশল গুলি জেনে রাখুন ।

মুখের যত্ন

কথায় বলে, সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র । তাই আমাদের জানা উচিত কীভাবে নিজেকে সুন্দর রাখা যায় । মানুষ সুন্দর হয়ে জন্মালেও যত্নবান না হলে সৌন্দর্য বেশি দিন টেকে না । আমরা অনেকেই মনে করি গায়ের রং ফর্সা হলেই বুঝি সে সুন্দর । আসলে তা নয় । রং আপনার যা-ই হোক না কেন, যদি তাতে গ্ল্যামার বা লাবণ্য থাকে তাকেই আজকাল সুন্দর বলে । ঘোলাটে, নির্জীব, দাগযুক্ত ত্বক যেমন নিজের কাছে খারাপ লাগবে তেমনি অন্যের কাছেও খারাপ লাগবে । আল্লাহ আপনাকে যেমনই বানান না কেন, একটু চেষ্টা করলেই আপনি অনেকখানি আকর্ষণীয় হতে পারেন সবার কাছে । তার জন্যে শুধু দরকার ধৈর্য ও নিয়ম মাফিক পরিচর্যা ।

মেয়েদের ২৪/২৫ বছর বয়স থেকেই বিশেষভাবে ত্বকের যত্ন, খাওয়াদাওয়া, ব্যায়াম ইত্যাদির দিকে নজর দেয়া উচিত । তাহলে ৫০ বছর বয়সেও নিজের রূপ ও সৌন্দর্য ধরে রাখা সম্ভব । সঠিক পদ্ধতি জেনে নিয়ে ধৈর্য ধরে নিজের পরিচর্যা করতে হবে ।

ত্বককে সুন্দর ও সতেজ রাখার জন্যে আপনাকে জানতে হবে আপনার মুখমণ্ডলের ত্বক কী ধরনের । যেমন-

  1. স্বাভাবিক ত্বক
  2. তৈলাক্ত ত্বক
  3. শুকনো ত্বক
  4. মিশ্র ত্বক

আপনার ত্বক কী ধরনের তা বোঝার জন্যে আপনি রাতে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে মুছে ঘুমোবেন । মুখে কিছু লাগাবেন না । এবার সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে দাঁড়ালেই বুঝতে পারবেন ।

যদি দেখেন মুখটা ভীষণ তেলতেলে হয়ে আছে তবে বুঝবেন আপনার মুখ তৈলাক্ত । একটি টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে দেখবেন টিস্যু পেপারটি তেলতেলে হয়ে গেছে ।

আর যদি দেখেন মুখমণ্ডলে হালকা তৈলাক্ত ভাব, শুধু নাক ও কপাল একটু চকচক করছে, কিন্তু চোখের কোণ খানিকটা শুকনো মনে হয়, টিস্যু পেপার দিয়ে মুখ মুছলেও খুব একটা তেল ভাব হয় না, তবে বুঝবেন আপনার ত্বক স্বাভাবিক ধরনের । আর শুকনো ত্বক দেখেই বুঝবেন ।

এ ত্বকে তেলতেলে ভাব দূরের কথা সতেজ ভাবও দেখা যায় না । এ ত্বকে অল্পতেই বলিরেখা পড়ে যাওয়ার আশংকা বেশি । এ ত্বক টিস্যু পেপার দিয়ে মুছলেও তেলতেলে ভাব মনে হবে না । আর মিশ্র ত্বকে মুখের বিভিন্ন অংশের ত্বকের প্রকৃতি বিভিন্ন রকম । নাক ও কপাল দেখা গেল তেলতেলে ভাব আবার গাল হতে পারে শুকনো ।

এ জাতীয় ত্বক হচ্ছে মিশ্র ত্বক । এ ত্বকের যত্নে শুকনো অংশের জন্যে শুকনো ত্বকের বিশেষ পরিচর্যা ও তৈলাক্ত অংশের জন্যে তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী বিশেষ পরিচর্যা গ্রহণ করতে হবে । এ ধরনের ত্বকের পরিচর্যা করা একটু ঝামেলার । তবে ধৈর্য ধরে করলে সুফল পাবেন । এবার জেনে নিন ত্বকের প্রকার ভেদ অনুসারে কীভাবে ত্বকের পরিচর্যা করতে হবে ।

স্বাভাবিক ত্বক

1. এ ধরনের ত্বকে সাধারণত সমস্যা অনেক কম । তাই অনেকে মনে করেন, এ ধরনের ত্বকের আর যত্নের দরকার কী ? এমনিতেই ভালো আছে । কিন্তু একটা বয়সের পর ত্বক নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না । তাই এ জাতীয় ত্বকের প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করা উচিত । পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মানেই যেমন ধোয়া-মোছা তেমনি ত্বকের পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রেও ধোয়া-মোছাই প্রথম । দিনে-রাতে মিলিয়ে কম করে পাঁচ বার মুখ স্বাভাবিক জল দিয়ে ধোবেন । এতে ধুলোবালি লোমকূপের গোড়ায় আটকে থাকতে পারবে না । ত্বক সজীব মনে হবে । সাবান অথবা বেসন ব্যবহার করে মুখমণ্ডল পরিষ্কার করতে পারেন । তবে সাবান বেশি না দেয়াই ভালো । প্রাকৃতিক উপাদান, যেমন: বুটের বেসন দিয়ে মুখমণ্ডল পরিষ্কার করতে পারেন । সাবানে যাদের এলার্জি তারা অনায়াসেই বেসন ব্যবহার করতে পারেন ।

2. রাতে শোবার আগে কুসুম গরম জল নিয়ে বেসন দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন । পরে মুখ মুছে গ্লিসারিনের সাথে সমপরিমাণ জল মিশিয়ে মুখে মেখে নিতে পারেন । এতে মুখের ত্বক নরম থাকবে এবং খসখসে হবে না । এছাড়া আপনি কোন স্কিন টনিক বা ফ্রেশনারও লাগাতে পারেন ।

3. সপ্তাহে অন্ততপক্ষে দুই/তিন দিন ফেসপ্যাক লাগাবেন । ফেসপ্যাক লাগানোর ১৫/২০ মিনিট পরে মুখমণ্ডল ভালো ভাবে স্বাভাবিক ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন । এতে মুখের উজ্জ্বলতা বাড়বে ।

4. বাইরে থেকে ঘরে ফিরে অবশ্যই মুখমণ্ডল ভালো ভাবে ধোবেন যাতে মেক-আপ লেগে না থাকে । বাইরের ধুলোবালি লোমকূপের গোড়ায় যেন আটকে না থাকে । তাহলে ব্রণ হবার ভয় থাকে না ।

5. মাঝে মাঝে মুখে গরম জলের ভাপ নিতে পারেন । এতে লোমকূপের গোড়া খুলে গিয়ে তেল-ময়লা জমতে পারবে না এবং ব্রণ হবার আশঙ্কা কমে যাবে ।

প্রতি রাতে অবশ্যই খুব ভালো ভাবে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে ঘুমোবেন । অসুবিধা হলে নিয়মিত ক্রিম লাগাতে পারেন । যে ক্রিম আপনার ত্বকে স্যুট করবে সেটাই ব্যবহার করবেন ।

স্বাভাবিক ত্বকের জন্যে কয়েকটি ফেসপ্যাক

এই ফেসপ্যাক থেকে যেকোনো একটি সপ্তাহে দুই/তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন ।

1. কমলালেবুর খোসা বাটা + অলিভ অয়েল + কাঁচা ডিমের কুসুম । এগুলো একত্রে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখমণ্ডলে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে স্বাভাবিক ঠান্ডা জলেতে মুখ ধুয়ে ফেলবেন ।

2. কয়েকটি চিনা বাদাম ভিজিয়ে বেটে নিন + কয়েক ফোঁটা খাঁটি মধু একত্রে মিশিয়ে মুখে ২০ মিনিট রেখে প্রথমে হালকা গরম জল ও পরে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন ।

3. কমলালেবুর খোসা বাটা + কয়েক ফোটা মধু একত্রে মিলিয়ে মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে প্রথমে হালকা গরম জল ও পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।

4. কাঁচা ডিমের কুসুম + একচামচ বেসন ও দুধের সর একত্রে পেস্টের মতো করে মুখে ১৫/২০ মিনিট রেখে প্রথমে কুসুম গরম জল, পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।

5. কাঁচা ডিমের কুসুম + একচামচ অলিভ অয়েল একত্রে মিশিয়ে মুখে ১৫ মিনিট রেখে স্বাভাবিক ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।

6. কাঁচা ডিমের কুসুম + অলিভ অয়েল ও মধু একত্রে মিশিয়ে মুখে মেখে ১৫-২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জলেতে মুখ ধুয়ে ফেলুন ।

7. ছোলার ডালের বেসন + মধু একত্রে মিশিয়ে মুখে ১৫/২০ মিনিট রেখে প্রথমে হালকা গরম জল, পরে ঠান্ডা জলেতে ধুয়ে ফেলুন । এ পদ্ধতি মুখের রং উজ্জ্বল করে এবং ত্বক নরম রাখে ।

8. মসুরের ডাল বাটা বা ডালের বেসন + কাঁচা দুধ + কয়েক ফোঁটা লেবুর রস + কয়েক ফোঁটা মধু একত্রে পেস্টের মতো করে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন । তারপর ঠান্ডা জলেতে মুখ ধুয়ে ফেলুন ।

তৈলাক্ত ত্বক

তৈলাক্ত ত্বক দেখলেই সহজে বোঝা যায় । তৈলাক্ত ত্বককে ভালো ত্বক বলা হলেও এর সমস্যা সবচেয়ে বেশি । তবে এ ত্বক বেশি বয়স পর্যন্তও সজীব থাকে এবং বলিরেখা সহজে পড়ে না । গরম কালে এ ত্বক থেকে বেশি পরিমাণে তেল বের হয় । তাই অন্যান্য ত্বকের তুলনায় এ ত্বকের যত্ন বেশি নিতে হয় এবং পরিষ্কার রাখতে হয় । দিনে-রাতে মিলিয়ে আট/১০ বার মুখ ধুয়ে এ ত্বক পরিষ্কার করলে ভালো । তা না হলে ব্রণ, ব্ল্যাক হেডস, একনি হবার আশঙ্কা থাকে । ফলে মুখে দাগ সৃষ্টি হয়ে বিশ্রী হয়ে যায় ।

1. এ জাতীয় ত্বক সাবান বা বেসন দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার রাখা উচিত ।

2. সবসময় হালকা গরম জল দিয়ে ধোবেন এবং পরে নরম তোয়ালে বা গামছা দিয়ে মুখ ভালো ভাবে মুছে নেবেন ।

3. মেক-আপ করার আগে কোনো অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লোশন তুলোয় করে নিয়ে মুখে লাগাবেন । এর ফলে মুখ থেকে বেশি তেল বেরিয়ে মেক-আপ নষ্ট হবে না ।

4. মুখে ব্রণ হলে হাত দিয়ে খোঁটাখুঁটি করবেন না ।

5. বেশি তেল ঘি ভাজা-পোড়া মশলা খাবেন না । ডাক্তারের পরামর্শে ভিটামিন- এ, ভিটামিন- ডি, ভিটামিন- সি মাঝে মধ্যে খেতে পারেন ।

6. প্রতিদিন দুই/তিন লিটার জল পান করবেন ।

7. রাতে ঘুমোবার আগে হালকা গরম জল মসুর ডালের বেসন দিয়ে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে শোবেন । শীতের দিনে গ্লিসারিন সমপরিমাণ জলের সাথে মিশিয়ে নিয়ে মুখে মেখে নিতে পারেন । গরমকালে কিছু দেয়ার দরকার হবে না ।

8. ক্রিমজাতীয় জিনিস তৈলাক্ত মুখে না দেয়াই ভালো । এতে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি ।

9. বাইরে থেকে ঘরে ফিরে অবশ্যই মুখমণ্ডল খুব ভালো করে ধুয়ে নেবেন । তা না হলে বাইরের ধুলোবালি লোমকূপের গোড়ায় আটকে ব্রণ উঠতে পারে । প্রথমে হালকা গরম জল দিয়ে, পরে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধোবেন । সবসময় নিজের তোয়ালে ও চিরুনি পরিষ্কার রাখবেন ।

10. সপ্তাহে দুদিন মুখে ফুটন্ত জলের ভাপ নিতে পারেন । ভাপ নেয়ার আগে মুখে কোনো নারিশিং ক্রিম ভালো করে মালিশ করে নেবেন । এতে ব্ল্যাক হেডগুলো (কালো মুখওয়ালা ব্রণ) নরম হয়ে উঠবে । তখন একটা স্টেরিলাইজড তুলো জড়ানো সরু কাঠি দিয়ে ব্ল্যাক হেডগুলোর চারপাশে চাপ দিলে ভেতর থেকে বেরিয়ে আসবে । তবে সাবধানে করতে হবে । নতুবা খোঁচা লেগে দাগ হতে পারে । একদিনে না বেরোলে জোর করে বের করতে যাবেন না । পরের দিন আবার চেষ্টা করবেন ।

11. যদি ভাপ নিতে না চান বা অসুবিধে মনে করেন তবে গরম জলেতে সামান্য বোরিক পাউডার মিশিয়ে তুলো ভিজিয়ে সেক দিতে পারেন । তাতেও উপকার পাবেন । এতে ব্রণের মধ্যকার জিনিস বেরিয়ে যায় । তবে ব্রণে যেন কোনো আঘাত না লাগে সেদিকে খেয়াল করতে হবে । এক দিনে না বেরোলে দু-তিন দিনে বের করবেন । এক দিনে চেপে বের করতে গেলে ক্ষতি হতে পারে ।

তৈলাক্ত ত্বকের কয়েকটি ফেসপ্যাক

1. মসুরের ডালের বেসন + খাঁটি সর্ষের তেল একত্রে মিশিয়ে পাতলা পেস্টের মতো করে মুখে লাগিয়ে তিন/চার ঘণ্টা রেখে হালকা গরম জল দিয়ে ঘষে ঘষে ধুয়ে ফেলুন । ঘষার সময় দেখবেন সাবানের ফেনার মতো হচ্ছে । এতে মুখের দাগ উঠে যায়, রং ফর্সা হয় । এই প্যাকে জল লাগাবেন না । বেসনের সাথে তেল মেশান ।

2. মসুরের ডাল বাটা + দুধের সর একত্রে ১৫/২০ মিনিট মুখে রেখে প্রথমে হালকা গরম জল দিয়ে, পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।

3. ডিমের সাদা অংশ + কয়েক ফোঁটা লেবুর রস একত্র করে ১৫ মিনিট রেখে স্বাভাবিক ঠান্ডা জল দিয়ে ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলুন ।

4. মসুরের ডালের বেসন + মধু একত্র করে ১৫/২০ মিনিট মুখে রেখে প্রথমে হালকা গরম জল এবং পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।

5. অলিভ অয়েল + কাঁচা ডিমের কুসুম + মসুরের ডাল বাটা একত্রে মুখে মেখে ১৫/২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন ।

শুকনো ত্বক

1. শুকনো ত্বকের খুব বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় । তা না হলে বয়স হলেই বলিরেখা পড়তে চায় এবং কুঁচকে যেতে চায়।

2. মুখ ধোয়ার পর সবসময় কোনো স্কিন টনিক বা ফ্রেশনার লাগাবেন । এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে ।

3. মেক-আপের আগে ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন । এতে মুখের ত্বক নরম ও ভেজা থাকবে ।

4. শুকনো ত্বকে কখনও অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লোশন লাগাবেন না । এতে ত্বক আরও রুক্ষ হবে ।

5. স্নানের আগে প্রতিদিন তা না পারলে সপ্তাহে দুদিন অলিভ অয়েল কিংবা সর্ষের তেল ১৫/২০ মিনিট ধরে ঘষে ঘষে লাগাবেন । আধঘণ্টা পরে ছোলার ডালের বেসন ও দুধের সর বা কাঁচা দুধ মেশানো পেস্টের মতো করে গায়ে ও মুখে মেখে স্নান করবেন ।

6. রাতে ঘুমানোর আগে এক চা চামচ কাঁচা দুধ নিয়ে তুলোয় ভিজিয়ে মুখে মেখে ১০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জলেতে ধুয়ে ফেলবেন ।

7. শসার রস ১০ মিনিট মুখে মেখে ধুয়ে ফেলবেন । এতে রং ফর্সা হয় ও উজ্জ্বলতা বাড়ে ।

8. বাইরে থেকে এসে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলবেন ।

9. রাতে মুখ ধুয়ে সমপরিমাণ জলের সাথে গ্লিসারিন মিশিয়ে মুখে মাখতে পারেন । মুখ নরম থাকবে । খসখসে ভাব হবে না ।

10. প্রচুর জল খাবেন । ভিটামিন- সি, ভিটামিন- এ, ভিটামিন- ডি যুক্ত খাবার খাবেন । প্রতিদিন দুধ খাবেন ।

11. রাতে হালকা গরম জল ব্যবহার করে ছোলার বেসন দিয়ে মুখ ধুয়ে কোনো ক্রিম বা গ্লিসারিন মেখে নেবেন । স্বাভাবিক ত্বকের ফেসপ্যাকগুলো শুকনো ত্বকেও ব্যবহার করা যায় ।

মিশ্র ত্বক

ত্বকের যত্নে ত্বক পরিষ্কার রাখাটা সব ত্বকের বেলায় এক । তাই মিশ্র ত্বক হলেও দিনে-রাতে কমপক্ষে পাঁচ বার ধুতে হবে । মিশ্র ত্বকের যত্নও স্বাভাবিক ত্বকের মতো । মিশ্র ত্বক দেখলেই বোঝা যায় । যেমন: সাধারণত নাকের ডগা, চিবুক তেলতেলে হয়ে থাকে । এ ত্বকের শুকনো জায়গায় শুকনো ত্বকের পরিচর্যার দরকার হয় । তাই মুখ ধোয়ার পর তৈলাক্ত অংশে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট লোশন এবং শুকনো অংশে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয় । এ ত্বকের বেলায়ও কিছু নিয়ম মানতে হয়, যেমন-

1. মাঝে মাঝে ভাপ নিতে হয় ।

2. সপ্তাহে তিন/চার দিন ফেসপ্যাক লাগাতে হয় ।

3. রাতে শোবার আগে ভালো ভাবে মুখ ধুয়ে ক্রিম লাগাবেন । শুকনো অংশে তৈলাক্ত ক্রিম এবং তৈলাক্ত অংশে লোশন ক্রিম লাগাবেন ।

4. বাইরে থেকে এসে সবসময় মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করুন ।

5. বেশি করে জল পান করবেন । খাবারে ভিটামিন- সি, ভিটামিন- এ, ভিটামিন- ডি রাখবেন ।

মিশ্র ত্বকের জন্যে কয়েকটি ফেসপ্যাক

1. ডিমের একটু সাদা অংশ + দুই চামচ কমলালেবুর রস + এক চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে মেখে ১৫ মিনিট রাখুন । এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলুন ।

2. দুধের সর + বেসন বা ওটমিল + লেবুর রস মিলিয়ে মুখে ১৫ মিনিট রেখে প্রথমে হালকা গরম, পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।

3. কাঁচা হলুদ + ময়দা + দুধের সর একত্রে মেখে ১৫ মিনিট রেখে প্রথমে হালকা গরম, পরে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।

4. শসার রস ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন ।

মুখের পরিচর্যায় সবসময় মনে রাখবেন

1. যে প্যাকটি আপনার ত্বকের সাথে সবচেয়ে মানিয়ে যাবে সেটি ব্যবহার করবেন।

2. প্রতিদিন সাত/আট ঘণ্টা ঘুমোনো উচিত।

3. তেল-মশলা, ভাজাপোড়া খাবার কম খাবেন।

4. সব্জি, কাঁচা ফলমূল ও সালাদ বেশি পরিমাণে খাবেন।

5. জল বেশি করে পান করবেন।

6. ভিটামিন- সি, ভিটামিন- এ, ভিটামিন- ডি এবং ভিটামিন- ই যুক্ত খাবার প্রতিদিনই খাবেন। এতে ত্বক ভালো থাকবে।

7. সপ্তাহে অন্তত দু-দিন প্যাক ব্যবহার করবেন।

8. প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে কুসুম গরম জল, প্রাকৃতিক উপাদান অথবা আপনার পছন্দের সাবান দিয়ে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে মুছে নিন । পরে ময়েশ্চারাইজিং লোশন দিয়ে পাঁচ মিনিট হালকাভাবে মুখ ম্যাসাজ করুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here