Upendra Kishore Roy Chowdhury Biography: আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম সাহিত্যের অন্যতম রূপকার উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।
Upendra Kishore Roy Chowdhury Biography In Bengali – উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী জীবনী
| নাম | উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী |
| জন্ম | ১২ মে ১৮৬৩, মসূয়া, কিশোরগঞ্জ, পূর্ববঙ্গ (বর্তমান বাংলাদেশ) |
| পিতা | কালিনাথ রায় |
| মাতা | জয়তারা দেবী |
| পেশা | লেখক |
| ধরন | শিশুসাহিত্যিক |
| জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় |
| সময়কাল | বাংলার নবজাগরণ |
| উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | ছোটদের রামায়ণ, সন্দেশ |
| সন্তান | সুকুমার রায় |
| মৃত্যু | ২০ ডিসেম্বর, ১৯১৫, (বয়স-৫২ বছর) কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী’র (Upendrakishore Ray Chowdhury Biography) জন্ম স্থান ও পিতামাতা
বাংলা শিশু ও কিশোর সাহিত্যের অন্যতম রূপকার উপেন্দ্রকিশোরের জন্ম ১৮৬৩ খ্রিঃ ১২ ই মে ময়মনসিংহ জেলার মসুয়া গ্রামের বিখ্যাত জমিদার বংশে। তাঁর পিতা কালীনাথ রায়চৌধুরী ছিলেন নানাশাস্ত্রে পন্ডিত। এই কারণে মুন্সী শ্যামসুন্দর বলেও তিনি পরিচিত হয়েছিলেন।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী’র ছোটবেলা: Upendrakishore Ray Chowdhury’s Childhood
কালীনাথের ছিল পাঁচপুত্র তিন কন্যা। তাঁদের মধ্যে দ্বিতীয় পুত্র কামদারঞ্জনকে পাঁচবছর বয়সে দত্তক নিয়েছিলেন হরিকিশোর রায়চৌধুরী নামে এক আত্মীয়।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী’র শিক্ষাজীবন: Upendrakishore Ray Chowdhury’s Educational Life
দত্তকপুত্র হিসেবে কামদারঞ্জনের নাম বদলে হল উপেন্দ্রকিশোর। ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে শিক্ষারম্ভ। ১৮৮০ খ্রিঃ প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন।
কলকাতায় এসে পরিচিত হলেন ব্রাহ্মসমাজের সর্বজন শ্রদ্ধেয় মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ এবং দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে দেবেন্দ্রনাথের পুত্র রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে।
স্বভাবতঃই উপেন্দ্রকিশোরও ব্রাহ্মধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হলেন। এই সূত্রেই তাঁর যাতায়াত শুরু হল জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে।
নতুন কিছু জানার বিষয়ে বরাবরই প্রবল ঝোঁক উপেন্দ্রকিশোরের। কলকাতায় নতুন নতুন বই পড়ার সুযোগ পেয়ে তার মধ্যে ডুবে গেলেন।
এই সময়েই উপেন্দ্রকিশোর একটা বিষয় লক্ষ করলেন, দেশের ছোটদের জন্য ভাল লেখা আঁকা ও ছাপা বই নেই। এই অভাব দূর করবার উদ্দেশ্যে একটা মাসিক পত্রিকা প্রকাশের চিন্তা তাঁর মাথায় আসে। প্রথমে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হলেও পরে ১৮৮৪ খ্রিঃ মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট থেকে বি.এ পাশ করেন।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী’র বিবাহ জীবন ও পরিবার: Upendrakishore Ray Chowdhury’s Marriage Life And Family
এই সময়ে ব্রাহ্মধর্মেও দীক্ষিত হন। ব্রাহ্মধর্ম প্রচলিত হিন্দুধর্মের রীতিনীতি ও মূর্তিপূজার বিরোধী হলেও উপেন্দ্রকিশোরের গোঁড়া হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবার তাঁর দীক্ষার ব্যাপার মেনেই নিলেন। এই বছরেই ব্রাহ্মনেতা দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের কন্যা বিধুমুখী দেবীকে বিবাহ করেন। ছাত্রাবস্থায় ১৮৮৩ খ্রিঃ সখা পত্রিকায় উপেন্দ্রকিশোরের প্রথম রচনা প্রকাশিত হয়েছিল।
এবারে শিশু ও কিশোরদের উপযোগী বিভিন্ন বিষয়ের ওপর লেখায় মনোনিবেশ করলেন।
ছোটদের বই সুন্দর করে ছাপিয়ে প্রকাশ করার পরিকল্পনা ছিল উপেন্দ্রকিশোরের। নিজে ছবি আঁকতে পারেন কাজেই সেসব বই হবে সচিত্র। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিজেকে প্রস্তুত করে নিলেন ছোটদের লেখা আঁকা ও ছবি এনগ্রেভিং সম্পর্কে।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী’র কর্ম জীবন ও রচনা: Upendrakishore Ray Chowdhury’s working life and composition
এরপর বিলেত থেকে ছাপার আধুনিক যন্ত্র আনাবার ব্যবস্থা করলেন। ১৮৯৫ খ্রিঃ শুরু হল নিজস্ব প্রেস। এইভাবেই সূত্রপাত হল এদেশে মুদ্রণশিল্পের নতুন অধ্যায়। ইতিমধ্যে সংসারে এসেছে দুই ছেলে সুকুমার ও সুবিনয়।
উপেন্দ্রকিশোর প্রেসের নাম দিলেন ইউ রায় অ্যান্ড সন্স। ছবি আঁকা ছবি তোলার স্টুডিও হল। আরও নানা উপকরণে সুসজ্জিত হল প্রেস। লেখা ও ছবি আঁকার পাশাপাশি চলতে লাগল হাফটোন ছবি ছাপার বিষয়ের পরীক্ষা নিরীক্ষা! এসম্পর্কে তাঁর রচিত প্রবন্ধ প্রকাশিত হল বিলেতের ম্যাগাজিন পেনরোজ অ্যানুয়েলে।
প্রশংসিত হলো সেইসব রচনা। তেলরং বা জলরং -এর হাফটোন ছবি ছাপার বিষয়টি যখন বিদেশে গবেষণার পর্যায়ে, উপেন্দ্রকিশোর এদেশে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে তাঁর প্রেসে ছাপার কাজ শুরু করেছেন।
তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইউ রায় অ্যান্ড সন্স কোম্পানি থেকেই ভারতবর্ষে প্রসেস-শিল্পবিকাশের সূত্রপাত হল।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী’র মৃত্যু: Upendrakishore Ray Chowdhury’s Death
১৯৯৫ খ্রিঃ ২০ শে ডিসেম্বর উপেন্দ্রকিশোর কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন-
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনী
- কাজী নজরুল ইসলাম সংক্ষিপ্ত জীবনী
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বাবার নাম কি?
কালীনাথ রায়চৌধুরী
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বিখ্যাত কেন?
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন একাধারে একজন সাহিত্যিক চিত্রকর সঙ্গীতজ্ঞ বাদ্যযন্ত্র বাদক এবং প্রখ্যাত মুদ্রণ শিল্পী। সেই সঙ্গে একজন সফল উদ্যোগপতি। হাফটোন ব্লক উদ্ভাবন : তিনি ভারতে প্রথম হাফটোন ব্লক নির্মাণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন এবং ‘রঙিন ব্লক’ তৈরি ও তার ব্যবহারের সূচনা করেন।
