প্রাণায়াম: একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন পদ্মাসনে প্রাণায়াম ভ্রমণ প্ৰাণায়াম

প্রাণায়াম: একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন পদ্মাসনে প্রাণায়াম ভ্রমণ প্ৰাণায়াম
প্রাণায়াম: একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন পদ্মাসনে প্রাণায়াম ভ্রমণ প্ৰাণায়াম

বিভিন্ন প্রাণায়াম: যোগ (Yoga) হল প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এক বিশেষ ধরনের শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা। শরীর, মন সুস্থ ও সবল রাখতে এবং রোগ মুক্তিতে যোগাসনের ভূমিকা আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। এই প্রথা সারা বিশ্বে আজও প্রচলিত আছে। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি বিভিন্ন প্রাণায়াম। বিভিন্ন প্রাণায়াম নিয়ে নিচে আলোচনা করা হল। যেমন- একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন পদ্মাসনে প্রাণায়াম ভ্রমণ প্ৰাণায়াম

প্রাণায়াম

প্রাণশক্তি বৃদ্ধি পায় ও দেহকে জরা-ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখে বলে একে প্রাণায়াম বলে ।

একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন

একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন করার পদ্ধতি:

মেরুদণ্ড সোজা রেখে প্রথমে এক পা ওপরে তুলে আর এক পা ভাঁজ করে নিচে রেখে (ছবির মতো করে) বসুন । এবার (ছবির মতো করে)

প্রাণায়াম: একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন পদ্মাসনে প্রাণায়াম ভ্রমণ প্ৰাণায়াম
একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন: ছবি- 1

ডান হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে নাকের ডান পাশের ছিদ্র চেপে ধরুন । এমনভাবে ধরুন যেন বাতাস বেরিয়ে যেতে না পারে । এবার বাম পাশের ছিদ্র দিয়ে দম নিয়ে অনামিকা দিয়ে বাম পাশের ছিদ্রটিও বন্ধ করে দিন ।

প্রাণায়াম: একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন পদ্মাসনে প্রাণায়াম ভ্রমণ প্ৰাণায়াম
পদ্মাসনে নাসায়ন: ছবি- 2

তারপর বাম ছিদ্র বন্ধ রেখেই ডান ছিদ্র থেকে বুড়ো আঙুল তুলে ডান ছিদ্র দিয়ে দম ছাড়ুন । বাম ছিদ্র বন্ধ রাখা অবস্থায়ই নাকের ডান ছিদ্র দিয়ে পুনরায় দম নিন । দম নেয়া হলে বুড়ো আঙুল দিয়ে ডান ছিদ্র বন্ধ করে পুনরায় বাম ছিদ্র দিয়ে দম ছাড়ুন । এভাবে একবার বাম নাক বন্ধ রেখে ও ডান নাক দিয়ে ছাড়া আবার ডান নাক বন্ধ রেখে বাম নাক দিয়ে ছাড়া এই মিলে একপ্রস্থ হবে । এভাবে ছয় থেকে ১০ প্রস্থ করতে পারেন । নাসায়ন আপনি পদ্মাসনে বসেও করতে পারেন ।

প্রাণায়াম: একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন পদ্মাসনে প্রাণায়াম ভ্রমণ প্ৰাণায়াম
নাসায়ন: ছবি- 3

একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন করার উপকারিতা:

এ প্রাণায়ামে ফুসফুসের খুব ভালো কাজ হয় । মাইগ্রেন নিরাময়ে ভালো ফল পাওয়া যায় । প্রাণায়ামের ফলে ফুসফুসে প্রচুর অক্সিজেন প্রবেশ করে । ফলে কোনো রোগ সহজে ফুসফুস আক্রমণ করতে পারে না ।

পদ্মাসনে প্রাণায়াম

পদ্মাসনে প্রাণায়াম করার পদ্ধতি:

প্রথমে মেরুদণ্ড সোজা রেখে মাটিতে দুই পা ছড়িয়ে বসুন । এবার বাম পা হাঁটু থেকে ভেঙে ডান ঊরুর ওপর এবং ডান পা একই ভাবে বাম ঊরুর ওপর রাখুন । হাত দুটো কোয়ান্টা ভঙ্গি করে চিৎ অবস্থায় দুই হাঁটুর ওপর রাখুন এবং তর্জনী ও বুড়ো আঙুল একত্রে (ছবির মতো করে) ধরে রাখুন । দৃষ্টি স্বাভাবিক সোজা বরাবর রাখুন ।

এবার নাকের দুই ছিদ্র দিয়ে ধীরে ধীরে দম নিতে থাকুন । বুক ফুলিয়ে দম নিন । কয়েক সেকেন্ড দম বন্ধ রেখে পুনরায় দুই নাকের ছিদ্র দিয়েই ধীরে ধীরে দম ছাড়ুন । চোখের দৃষ্টি রাখুন নাকের অগ্রভাগে ও মনোযোগ রাখুন দমের প্রবেশ পথে নাকের ছিদ্রতে । এভাবে এক থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত করতে পারেন ।

প্রাণায়াম: একনাসা প্রাণায়াম বা নাসায়ন পদ্মাসনে প্রাণায়াম ভ্রমণ প্ৰাণায়াম
পদ্মাসন

কখনো পা ব্যথা হয়ে উঠলে পা পরিবর্তন করে বসতে পারেন ।

পদ্মাসনে প্রাণায়াম করার উপকারিতা:

বি.দ্র .: অবশ্যই আগে পদ্মাসন অভ্যাস করুন । তারপর প্রাণায়াম করুন ।

1. হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।

2. হাঁপানি রোগ হতে পারে না । থাকলে ভালো উপকার পাওয়া যায় ।

3. মেরুদণ্ড সোজা ও সবল রাখে ।

4. চিন্তা শক্তি, স্মৃতি শক্তি, ইচ্ছা শক্তি ও মনের একাগ্রতা বাড়ে ।

5. পায়ের পেশি ও স্নায়ু ভালো, সতেজ ও সক্রিয় থাকে, পায়ে বাত হতে পারে না ।

ভ্রমণ প্ৰাণায়াম

ভ্রমণ প্ৰাণায়াম করার পদ্ধতি:

মেরুদণ্ড সোজা রেখে সমান তালে পা ফেলে হাঁটতে শুরু করুন । এবার ছয় কদমে হাঁটতে হাঁটতে দম নিন এবং আট কদমে দম ছাড়ুন । অর্থাৎ ধীরে ধীরে দম নিতে নিতে মনে মনে গণনা করে ছয় কদম এগিয়ে যান । আর ধীরে ধীরে দম ছাড়তে ছাড়তে মনে মনে গণনা করে আট কদম হাঁটুন ।

ফলে দম নেয়ার চেয়ে ছাড়ার সময় একটু বেশি লাগবে । পাঁচ/সাত মিনিট এভাবে প্রতি বার হাঁটুন । ধীরে ধীরে কদমের সংখ্যা বাড়াতে থাকুন । আট কদমে নিন । ১০ কদমে ছাড়ুন । ১০ কদমে নিন । ১২ কদমে ছাড়ুন । ১২ কদমে নিন । ১৬ কদমে ছাড়ুন ।

ভ্রমণ প্ৰাণায়াম করার উপকারিতা:

1. এ প্রাণায়ামটি সবার জন্যে উপযোগী । বিশেষ করে বয়স্কদের জন্যে বিশেষ উপযোগী ।

2. যারা অসুখ-বিসুখের জন্যে কোনো ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন না তারা এ প্রাণায়ামটি অভ্যাস করলে শরীর রোগমুক্ত রাখতে পারবেন ।

বি.দ্র . : প্রাণায়ামটি করার সময় যদি বুকে চিনচিন ব্যথা অনুভব করেন তাহলে বুঝতে হবে ফুসফুসের ক্ষমতা অনুযায়ী মাত্রা বেশি হয়ে যাচ্ছে । যেদিন এরকম অনুভব করবেন সেদিন বন্ধ রাখুন । পরে মাত্রা কমিয়ে দুই/তিন মিনিট করুন এবং ধীরে ধীরে সময় বাড়িয়ে পাঁচ/সাত মিনিট করুন ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here