শীর্ষাসন করার পদ্ধতি ও উপকারিতা: যোগ (Yoga) হল প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এক বিশেষ ধরনের শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা। শরীর, মন সুস্থ ও সবল রাখতে এবং রোগ মুক্তিতে যোগাসনের ভূমিকা আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। এই প্রথা সারা বিশ্বে আজও প্রচলিত আছে। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি শীর্ষাসন করার পদ্ধতি ও উপকারিতা যা আপনার শরীর মন ভালো রাখতে সাহায্য় করবে।
শীর্ষাসন করার পদ্ধতি ও উপকারিতা – Methods And Benefits Of Sirsasana
শীর্ষাসন করার পদ্ধতি:
প্রথমে বজ্রাসনে বসু । এবার সামনের দিকে ঝুঁকে আঙুলগুলো একে দুহাতের অপরের মধ্যে ঢুকিয়ে জোড়াবদ্ধ করে নিয়ে কনুই থেকে মাটিতে রাখুন। মাথার তালু মাটিতে স্পর্শ করে রাখুন (১ নং ছবির মতো)।
এবার এ ভঙ্গিমায় ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড অবস্থান করুন। এভাবে একবার করার পর ১০ সেকেন্ড করে বিশ্রাম নিয়ে দুই থেকে তিন বার করুন। যারা পূর্ণ শীর্ষাসন করতে পারবেন না তারাও এভাবে শীর্ষাসনের কিছুটা ফল পাবেন। দম স্বাভাবিক থাকবে।
এবার পূর্ণ শীর্ষাসন করতে হলে দুহাতের কনুই মাটিতে রাখুন। দুই কনুইয়ের মধ্যে এক ফুট পরিমাণ ফাঁক থাকবে। দুহাতের আঙুল একে অপরের মধ্যে খাপবদ্ধ থাকবে। এবার শক্তভাবে খাপবদ্ধ রেখে দুই কনুইয়ের ওপর ভর দিয়ে দেয়ালে সাপোর্ট রেখে (৪ নং ছবির ভঙ্গিমায়) ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড অবস্থান করুন। দম স্বাভাবিক থাকবে।
এভাবে একবার করে বিশ্রাম নিয়ে দুই থেকে তিন বার করতে পারেন। যদি তা-ও সম্ভব না হয় তাহলে একজনের সাহায্য নিয়ে দুই পা মাটি থেকে জোড় করে ওপরে তুলে ধরে রাখতে পারেন। আসনটিতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে একসাথে এক থেকে তিন মিনিট করা যায়। তখন কোনো সাপোর্টের প্রয়োজন হবে না। এরপর শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে।
বি. দ্র. : যাদের উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ অথবা চোখের কোনো কঠিন অসুখ আছে তারা শীর্ষাসন করবেন না।
আরও পড়ুন-
- হলাসন করার পদ্ধতি ও উপকারিতা
- সর্বাঙ্গাসন করার পদ্ধতি উপকারিতা
- উষ্ট্রাসন করার পদ্ধতি উপকারিতা
- Shirshasana Wikipedia
শীর্ষাসন করার উপকারিতা
1. শীর্ষাসনের সময় প্রচুর রক্ত মস্তিষ্কের দিকে ধাবিত হয়। মস্তিষ্ক হচ্ছে আমাদের মহা শক্তিশালী জৈব কম্পিউটার। এখানে রয়েছে বিশেষ গ্রন্থি হাইপোথ্যালামাস যা হরমোন নিঃসরণ ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক।
2. দৃষ্টি স্মৃতি শ্ৰবণ স্পর্শ অনুভূতির কেন্দ্রস্থল হলো মস্তিষ্ক। মস্তিষ্কে অবস্থিত এ স্নায়ু কেন্দ্রগুলোকে নিয়মিত শীর্ষাসনের মাধ্যমে সুস্থ রাখা যায়।
3. নিয়মিত শীর্ষাসন করলে মাথাব্যথা থেকে উপশম পাওয়া যায়।
4. রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় বলে চোখ কান নাক দাঁতে সহজে কোনো রোগ হতে পারে না।
5. পিটুইটারি গ্রন্থিতে রক্ত চলাচল প্রচুর পরিমাণে হয় বলে এ গ্রন্থির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে দেহের সমস্ত গ্রন্থি ও স্নায়ু সুস্থ ও সক্রিয় থাকে।
6. টনসিলের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
7. মেয়েদের জরায়ু সরে গেলে নিয়মিত এ আসনটি করলে তা ঠিক জায়গায় ফিরে আসে।
8. এছাড়া লিউকোরিয়া, অর্শ, একশিরা, হাঁপানি, মাথাধরা, আলস্য ইত্যাদি দূর হয়।