Jasimuddin Biography: আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম পল্লীকবি জসীমউদ্দিন (Jasimuddin) -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।
Jasimuddin Biography In Bengali – পল্লীকবি জসীমউদ্দিন জীবনী
নাম | জসীমউদ্দীন |
জন্ম | ১ জানুয়ারি ১৯০৩ |
জন্মস্থান | ফরিদপুরের তাম্বুলখানা |
পিতা | আনসার উদ্দীন |
মাতা | আমিনা খাতুন |
পেশা | কবি |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
ধরন | কবিতা |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলী | নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কার |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
মৃত্যু | ১৪ মার্চ ১৯৭৬ |
পল্লীকবি জসীমউদ্দিন জীবনী
বাংলার পল্লীপ্রকৃতি ও গ্রামবাংলাকে প্রধান বিষয় করে কাব্য রচনার মাধ্যমে সাহিত্যের ইতিহাসে এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন জসীমউদ্দিন।
বাংলার রাখালী, সাজী, মুরশেদি, ভাটিয়ালি, বাউল, মারফতী গানের ধারার উত্তরসাধক হিসেবেই তিনি চিহ্নিত হয়েছেন। জসীমউদ্দিনের কবিতায় বাংলার যে সাধারণ মানুষের অন্তরঙ্গ চিত্র চিত্রিত হয়েছে, তারা চিরকাল দাঁড় টেনেছে, লাঙ্গল দিয়ে মাঠে চাষ করেছে, কামারশালায় হাঁপর টেনেছে, নেহাইয়ে লোহা পিটিয়েছে।
এরাই ঝড়তুফানের ঝাপটা মাথায় নিয়ে নৌকায় সাগর প্রমাণ দুরন্ত পদ্মায় বদর বদর বলে পাড়ি দিয়েছে। এদেরই সাধারণ সুখ দুঃখ, ভালবাসা, বিরহ, মিলন, পালা, পার্বণের আনন্দ, জমি নিয়ে মাঠের ফসল নিয়ে কলহ, শোকে অবুঝের মতো কান্না -এদের মতো করে, এদেরই মুখের ভাষায় এ অনুভূতিকে জসীমউদ্দিন আন্তরিকভাবে তুলে ধরেছেন তাঁর রচনায়।
তাঁর কবিতার সহজ সরল ভাষা ও নিরাভরণ সৌন্দর্য সহজেই পাঠককে আকৃষ্ট ও মুগ্ধ করে।
জসীমউদ্দিন এর জন্ম স্থান ও পিতামাতা: Birth Place And Parents Of Jasimuddin
বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় কবি জসীমউদ্দিনের জন্ম ১৯০৪ খ্রিঃ। তিনি যখন দশম শ্রেণীর ছাত্র সেই সময় রচনা করেন বিখ্যাত ‘কবর’ কবিতা।
কবিতাটি শুরু হয়েছে আশ্চর্য এক মর্মস্পর্শী আবেগ নিয়ে-
এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে।
তিরিশ বছর ভিজিয়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
পুতুলের খেলা ভেঙ্গে যেতো বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।।
জসীমউদ্দিন এর শিক্ষাজীবন: Jasimuddin’s Educational Life
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম -এ পাশ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গভাষা ও সাহিত্যের রামতনু লাহিড়ী অধ্যাপক ডঃ দীনেশচন্দ্র সেন বাংলা লোকগীতি ও লোকসাহিত্য সংগ্রহ ও গবেষণার কাজে তরুণ জসীমউদ্দিনকে নিযুক্ত করেছিলেন। দীনেশচন্দ্র জসীমউদ্দিনের কবিতার বিশেষ অনুরাগী ছিলেন।
জসীমউদ্দিন এর রচনা: Written by Jasimuddin
১৯২৯ খ্রিঃ ‘নক্সীকাঁথার মাঠ’ -জসীমউদ্দিনের কবিতা – কাহিনীর বই প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বাংলা কাব্য-অঙ্গনে সাড়া তোলে।
এই কাব্যগ্রন্থের ইংরাজী অনুবাদ প্রকাশিত হলে বিদেশেও তাঁর নাম ছড়িযে পড়ে। অবনীন্দ্রনাথ এই কাব্যগ্রন্থের ভুমিকায় লিখেছিলেন, “শহরবাসীদের কাছে এই একখানি সুন্দর কাঁথার মতো করে বোনা লেখার কতটা আদর হবে জানি না- আমি এটিকে আদরের চোখে দেখেছি। কেননা এই লেখার মধ্য দিয়ে বাংলার পল্লীজীবন আমার কাছে চমৎকার মাধুর্যময় ছবির মত দেখা দিয়েছে।”
এই কাব্যগ্রন্থের সুবাদে মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সেই জসীমউদ্দিন দেশজোড়া খ্যাতি লাভ করেন। সেই সময়ে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের দীপ্তিতে উজ্জ্বল বাংলার কবিতার অঙ্গন! তারই মধ্যে নতুন ভাষা ও নতুন ভাবের জন্য জসীমউদ্দিনের কবিতা তার নিজস্ব স্থান করে নিতে সক্ষম হল।
গোড়ার দিকে তিনি নিজের নাম লিখতেন জসীমউদ্দিন মোল্লা। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর নামটি ছেঁটে শুধু জসীমউদ্দিন করবার পরামর্শ দিলে, কবি পরবর্তীকালে সেই নামই ব্যবহার করতে থাকেন।
জসীমউদ্দিন নিজে গান লিখতেন; গাইতেও পারতেন ভাল। বহু সারি, জারি, ভাটিয়ালি গান তিনি লিখেছেন, তাতে সুর দিয়েছেন। ‘নিশীথে যাইও ফুল বনে রে ভ্রমর’ কিংবা ‘ও রঙিলা নায়ের মাঝি, এই ঘাটে লাগাইয়া নাও, নিগুণ কথা কইয়া যাও শুনি’ প্রভৃতি ভাটিয়ালি গানের সুর স্বনামধন্য গায়ক সুরকার শচীনদেব বর্মনের কন্ঠে একসময় সমস্ত দেশ মাতিয়ে তুলেছিল। এই মন-পাগল করা গান-গুলি জসীমউদ্দিনের রচনা।
জসীমউদ্দিনের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী, রাখালী, নক্সীকাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, বালুচর, মাটির কান্না, ধান ও ক্ষেত, ঠাকুরবাড়ির আঙ্গিনায় ইত্যাদি।
এছাড়া গ্রামবাংলার প্রচলিত গল্প ও কাহিনী সংগ্রহ করে ‘বাঙালীর হাসির গল্প’ নামে কয়েক খন্ডে প্রকাশ করেন।
জসীমউদ্দিন এর মৃত্যু: Jasimuddin’s Death
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ১৯৭১ খ্রিঃ কবি লোকান্তরিত হন।
আরও পড়ুন-
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনী
- কাজী নজরুল ইসলাম সংক্ষিপ্ত জীবনী
জসীমউদ্দিন এর জন্ম কত সালে?
১ জানুয়ারী, ১৯০৩
কবি জসীমউদ্দিনের মায়ের নাম কি?
আমিনা খাতুন
পল্লী কবি জসীমউদ্দিন বিখ্যাত কবিতা কোনটি?
নকশী কাঁথার মাঠ কবির শ্রেষ্ঠ রচনা যা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।