পারিবারিক শিষ্টাচার গুলি যা মানুষকে সুখী ও পরিতৃপ্ত করে

পারিবারিক শিষ্টাচার গুলি যা মানুষকে সুখী ও পরিতৃপ্ত করে
পারিবারিক শিষ্টাচার গুলি যা মানুষকে সুখী ও পরিতৃপ্ত করে

পারিবারিক দায়িত্ব বা কর্তব্য নিয়ে আমরা সবাই কম বেশি চিন্তিত থাকি । মানুষকে সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পরিবারই তার প্রয়োজনীয় সবকিছুর ব্যবস্থা করে দেয়। পরিবারে পিতার যেমন একটি অবস্থান রয়েছে তেমনি রয়েছে মায়ের ও ছেলে-মেয়েদের, তাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে পারিবারিক আলাদা ও ভিন্ন ধরনের দায়িত্ব ও ভূমিকা, যা তাদের সামাজিক দায়িত্ব ও ভূমিকার সাথে মিলে না। তাই আমরা এখানে পারিবারিক শিষ্টাচার গুলি যা মানুষকে সুখী ও পরিতৃপ্ত করে সেই সম্পর্কে জানাবো । যেমন- সফল পরিবার গঠনের প্রক্রিয়া ।

পারিবারিক শিষ্টাচার

মানুষ একা বাঁচতে পারে না, সুখী হতে পারে না । সুন্দর ও সামাজিক জীবনই মানুষকে সুখী ও পরিতৃপ্ত করে । আর সমাজের প্রাথমিক একক হচ্ছে পরিবার । জাগতিক ও আত্মিক সুখসমৃদ্ধির ভিত্তিও হচ্ছে পরিবার । পরিবার গড়ে ওঠে একজন নারী ও একজন পুরুষের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে ।

এ সম্পর্ক যত ঘনিষ্ঠ হবে, যত মমতা ও শ্রদ্ধামাখা হবে, পারস্পরিক আচার-আচরণ যত প্রো একটিভ, সুশৃঙ্খল ও সুপরিকল্পিত হবে, জীবনে তত সুখ, পরিতৃপ্তি ও সার্থকতা আসবে । তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, সুখী পরিবারের ভিত্তি হচ্ছে ভালবাসা মমতা শ্রদ্ধা শৃঙ্খলা ও আত্মিক একাত্মতা । সবসময় মনে রাখতে হবে পরিবারে নারী ও পুরুষ একে অপরের পরিপূরক । এই পরিপূরক একাত্মতাই সুখসমৃদ্ধির ভিত্তি । তাই পরিবারে নারী ও পুরুষের বিশ্বাস, দৃষ্টিভঙ্গি, অভ্যাস ও আচরণ যত প্রো-একটিভ ও সুশৃঙ্খল হবে ততই পরিপূরক একাত্মতা সৃষ্টি হবে, জীবনে আসবে স্বর্গীয় প্রশান্তি ।

সফল পরিবার গঠনের প্রক্রিয়া পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

ব্যক্তি জীবনে পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. সকালে ঘুম ভাঙতেই বলুন-শোকর আলহামদুলিল্লাহ/থ্যাংকস গড়/হরি ওম/প্রভু তোমাকে ধন্যবাদ । জীবনে কী নেই তা না ভেবে কী আছে তা নিয়ে ভাবুন ।

2. স্রষ্টায় অবিচল বিশ্বাস ও আস্থা রাখুন ।

3. নিয়মিত আবশ্যিক ইবাদত/উপাসনা করুন ।

4. দায়িত্বশীল ও আত্মবিশ্বাসী হোন ।

5. আত্ম উন্নয়নের লক্ষ্যে নিয়মিত পড়াশোনা করুন ।

6. পরিমিতি ও সংযম অবলম্বন করুন ।

7. সব ব্যাপারে সময় ও নিয়মানুবর্তী হোন ।

8. পরিকল্পিতভাবে সকল কাজ করুন ।

9. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকুন । শালীন ও মার্জিত পোশাক পরিধান করুন ।

10. শুদ্ধ ও সুন্দর ভাষায় কথা বলুন ।

11. পরচর্চা ও গীবত করবেন না । মিথ্যা বর্জনে সচেষ্ট থাকুন ।

12. নিয়মিত আত্মপর্যালোচনা করুন ।

আচরণে পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. সবসময় প্রো-একটিভ থাকুন ও হাসিমুখে কথা বলুন ।

2. সবসময় মনে রাখুন, রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন ।

3. কথা ও কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করুন ।

4. নিজেকে আদর্শ মানুষ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করুন ।

5. রাগ ও ক্রোধের বশে কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকুন ।

6. বিতর্ক ও ঝগড়া কৌশলে পরিহার করুন ।

7. সেন্টিমেন্ট ও আবেগ প্রকাশে কুশলী হোন ।

8. কর্মচারী ও গৃহকর্মীর সাথে মানবিক আচরণ করুন ।

9. কাউকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেবেন না ।

10. কাউকে ঠকানোর চেষ্টা করবেন না ।

11. কারো প্রতি ক্ষোভ ও ঈর্ষা পোষণ করবেন না ।

12. স্বজ্ঞানে অন্যের ক্ষতি করবেন না ।

13. জীবনের সর্বক্ষেত্রে অপচয়কে পরিহার করুন ।

14. সৎ ও বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিতি লাভের চেষ্টা করুন ।

15. অহংকার ও লোক-দেখানো আচরণ না করে আন্তরিক ও বিনয়ী হোন ।

আরো পড়ুন- পারিবারিক দায়িত্ব নিতে জানুন আপনার কি কি করণীয়

পারিবারিক জীবনে পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. সবসময় ‘কী পেতে পারি’ নয় ‘কী দিতে পারি’ -এ চিন্তা করুন ।

2. পরস্পরকে বুঝতে চেষ্টা করুন ।

3. পারিবারিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সবার মতামতকে গুরুত্ব দিন । অন্যের কথায় কান দেবেন না । ভুল বোঝাবুঝি নিজেরাই আলাপ আলোচনা করে দূর করুন । তৃতীয় কাউকে এতে জড়াবেন না ।

3. ঘরের কথা বাইরে বলা থেকে বিরত থাকুন ।

5. পরস্পরের জন্যে নিয়মিত দোয়া করুন ।

6. পরিবারে অশান্তি ও কলহ সৃষ্টি হতে পারে এমন কথা বলবেন না ।

7. একান্নবর্তী পরিবার হলে সবার সন্তানকেই এক নজরে দেখুন । সবার জন্যে একই মানের কেনাকাটা করুন ।

8. ভ্রমণ ও বিনোদনের ব্যাপারে পরিবারের বেশিরভাগের মত অনুসারে সিদ্ধান্ত নিন । সবাইকে নিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা করুন ।

9. পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিয়মিত আত্ম উন্নয়নমূলক আলোচনার আয়োজন করুন ।

10. অপ্রয়োজনে জ্বলে থাকা বাতি বা ফ্যান নিভিয়ে রাখুন ।

11. টিভি দেখে সময় নষ্ট না করে পরিবারের সদস্যদের সময় দিন ।

12. পরিমিত জল খরচ করুন । কল খোলা রেখে জল অপচয় করবেন না ।

13. সমাজের চোখে দৃষ্টিকটু সম্পর্ক বর্জন করুন । দাম্পত্যজীবনে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়- এমন সম্পর্ক এড়িয়ে চলুন ।

14. গৃহকর্মীদেরকে নিজেদের সমমানের খাবার প্রদান করুন ।

15. পরিবারকে ধূমপান ও নেশামুক্ত এলাকায় পরিণত করুন ।

সন্তান পালনে পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সন্তানকে সমান দৃষ্টিতে দেখুন । এক সন্তানকে অন্য সন্তানের সঙ্গে তুলনা করবেন না ।

2. সন্তানকে নেতিবাচক কথা বলে তিরস্কার করবেন না । সন্তানকে ধমকে কথা বলবেন না । রাগের মাথায় অভিশাপ দেবেন না ।

3. অন্যের সামনে সন্তানকে বকবেন না, ভুল ধরিয়ে দেবেন না ।

4. সন্তানকে ছোট থেকেই স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলুন ।

5. সন্তানকে সবসময় আদেশ না করে তার করণীয় কাজ যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিন । যেকোনো ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করুন ।

6. সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দিন । তাদের বন্ধুদের ব্যাপারে সজাগ থাকুন । সন্তানের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করুন ও নিজেদেরকে আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করুন ।

7. সারাক্ষণ শুধু পড়ার কথা না বলে খেলাধুলা, বেড়ানো, বই পড়া ইত্যাদি সুস্থ বিনোদনের সুযোগ করে দিন ।

8. সন্তান কোনো কিছু চাওয়ার সাথে সাথেই তাকে তা দেয়ার অভ্যাস পরিহার করুন । তাদের অন্যায় আবদার পূরণ করবেন না ।

9. সন্তানের বয়স ১৮ বছর হলে পারিবারিক পরামর্শে তাকেও অংশীদার করুন ।

10 বিনোদনের নামে সন্তান অপসংস্কৃতি ও ড্রাগ এডিকশনের শিকার হচ্ছে কি না সেদিকে লক্ষ রাখুন ।

11. তাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রয়োগে দক্ষ মানুষরূপে গড়ে তুলুন ।

12. সন্তানের নৈতিক, মানসিক, আত্মিক ও সৃজনশীল গুণাবলি বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করুন ।

13. চাকরির পরিবর্তে সন্তানকে স্বাধীন পেশা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করুন ।

14. আগে সালাম দেয়া ও হাত মেলানোয় অভ্যস্ত করে তুলুন ।

15. পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য ও বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে সন্তানকে যথাযথ ধারণা দিন । আর্থিক ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলবেন না ।

16. সন্তানের ওপর জীবনের লক্ষ্য চাপিয়ে দেবেন না । সিদ্ধান্ত নিতে তাকে সহযোগিতা করুন ।

17. সন্তানকে আদরের নামে প্রশ্রয় দেবেন না ও শাসনের নামে অত্যাচার করবেন না । আদর ও শাসনের সমন্বয়ে তাকে বিকশিত হতে দিন ।

সন্তান হিসেবে পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. মা-বাবাকে সম্মান করুন, তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করুন ।

2. মা-বাবার কোনো ভুল আচরণে ক্ষুব্ধ হবেন না । মনে রাখুন তাদের মাধ্যমেই আপনি পৃথিবীতে এসেছেন ।

3. যেকোনো ভালো কাজে যাওয়ার আগে তাদের দোয়া নিন ।

4. বয়োবৃদ্ধ মা-বাবাকে নিজের শিশু সন্তানের মতো যত্ন নিন ।

5. ঘরের কাজে সাধ্যমতো সাহায্য করুন ।

পরিবারে বয়স্কদের প্রতি পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. সহানুভূতিশীল হোন । তাকে সময় দিন । তার খাওয়াদাওয়া, চিকিৎসা, আর্থিক এবং অন্যান্য প্রয়োজনে খোঁজখবর নিন ।

2. সবসময় তাকে বলুন, ‘আপনি ভালো আছেন’ এবং তাকে বুঝতে দিন ‘আমরা আপনার পাশে আছি’ ।

3. পরিবারে বয়স্কদের আগে সালাম দিন ।

4. বাড়ির ছোটদেরকে তার সঙ্গে গল্প করা, সময় কাটানোতে উৎসাহিত করুন ।

5. তাকে গুরুত্ব দিন । পারিবারিক সিদ্ধান্তে তার মতামত নিন ।

6. একের পর এক নিষেধাজ্ঞা সরাসরি চাপাবেন না । ক্ষতিকর অভ্যাস বর্জনের জন্যে তাকে উদ্বুদ্ধ করুন ।

7. চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়লে তার প্রতি মানবিক ও সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করুন ।

তরুণ বয়সে পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. জ্ঞান অর্জন ও আত্ম উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টিকারী আবেগপ্রবণ সম্পর্ক পরিহার করুন ।

2. অতি আবেগ পরিহার করে বাস্তবমুখি মানসিকতার বিকাশ ঘটান ।

3. জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সে লক্ষ্যে নিজের মেধা, শ্রম ও সময়কে সর্বতোভাবে কাজে লাগান ।

4. বিয়ের আগেই বিবাহ পরবর্তী আচরণে জড়াবেন না ।

5. বিপরীত লিঙ্গের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আকর্ষণকে নিয়ন্ত্রণ করুন ।

আত্মনির্মাণে পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. নিয়মিত মেডিটেশন ও কোয়ান্টাম ব্যায়াম করুন ।

2. সৎসঙ্ঘে যত বেশি সম্ভব মেধা, শ্রম ও সময় দেয়ার চেষ্টা করুন ।

3. আলোকিত জীবন গড়তে প্রতি মঙ্গলবার আলোকায়ন কার্যক্রমে সবান্ধব আসুন । সকাল ৭.৩০ থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার ১০ টি সেশনের যেকোনোটিতে অংশ নিন । আলোচনা, মেডিটেশন ও কাউন্সেলিং ছাড়াও এতে রয়েছে আলোকচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনী ।

4. প্রতি শুক্রবার সকালে নিকটবর্তী সেন্টার/শাখা/সেল/প্রি-সেলের সাদাকায়ন কার্যক্রমে যৌথ মেডিটেশন ও আলোচনায় অংশ নিন ।

5. ধ্যানের আনন্দ ও প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভে লামার কোয়ান্টামমে ধ্যানসাফারি এক চমৎকার আয়োজন । প্রায় প্রতিমাসেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সাফারি । সপরিবারে ভ্রমণের বৈচিত্রময় স্বাদ উপভোগ করতে অক্টোবর থেকে মার্চ লামার কোয়ান্টামম এক ব্যতিক্রমী স্থান ।

6. মাসে কমপক্ষে এক দিন কোয়ান্টায়নে অংশ নিন ।

7. লামায় কোয়ান্টামমে তিন দিনের কোয়ান্টায়নে অংশ নিন ।

8. তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ ও বিশ্বমানের টেকনোটিয়ার হিসেবে গড়ে ওঠার লক্ষ্যে ফাউন্ডেশন পরিচালিত চার দিনব্যাপী কোয়ান্টাম বেসিক কম্পিউটিং ও বেসিক হার্ডওয়্যার এর দুটি প্রোগ্রামে অংশ নিন ।

সামাজিক ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. আত্মীয় ও বন্ধুদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রাখুন ।

2. অসুস্থ বা সমস্যাগ্রস্ত বন্ধু, আত্মীয় ও প্রতিবেশীর খোঁজখবর নিন, দোয়া করুন ।

3. ঈদ, পূজা বা আনন্দ উৎসবে বন্ধু ও আত্মীয়দের সাধ্যমতো টুকিটাকি উপহার দিন ।

4. গৃহকর্মী ও নিরক্ষরদের অক্ষর জ্ঞান দানে সচেষ্ট হোন ।

5. নিজের মত তর্ক বা জোর করে অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা করবেন না ।

6. সামাজিক অনুষ্ঠানে উপহার দেয়া-নেয়ার প্রথা বর্জন করুন । কারণ উপহার তা-ই যা স্বেচ্ছায়, আনন্দচিত্তে নিঃশর্তভাবে দেয়া হয় ।

7. সামাজিক মেলামেশা, কথাবার্তা ও আচার-আচরণে স্থান কাল পাত্র বিবেচনা করুন । সর্বাবস্থায় মার্জিত ভাব বজায় রাখুন । নিজেকে বিরক্তিকর করে তুলবেন না ।

8. স্বার্থান্বেষী প্রতারক ও অন্যায়কারী পরিচিতদের সঙ্গে মানসিক সম্পর্ক ছেদ করুন ।

9. অহেতুক অন্যের প্রতি সমালোচনামূলক মানসিকতা পরিহার করুন । কর্মক্ষেত্রে

10. সবাইকে আগে সালাম দেয়া ও হাত মেলানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন ।

11. পেশাগত ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির রাখুন । পেশাগত দক্ষতা অর্জনে সদা সচেষ্ট থাকুন । লক্ষ্য অনুসারে কর্মকৌশল নির্ধারণ করুন । লক্ষ্য অর্জনের প্রতিটি ধাপ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখুন ।

12. সাধারণত পেশা নিজের অন্তর্নিহিত গুণের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ না হলেই অন্তর্দ্বন্দ্ব হয় । মেজাজ খারাপ থাকে । সহকর্মীদের সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধে ।
প্রো-একটিভ আচরণের পরিবর্তে রি-একটিভ আচরণ সৃষ্টি হয় । সম্পর্কের অবনতি ঘটে । তাই সর্বাবস্থায় বাস্তববাদী ও প্রো-একটিভ থাকতে চেষ্টা করুন ।

13বিনয়ী থাকুন । স্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব বজায় রাখুন । কোনো অন্যায় কাজে সাথী হবেন না । কর্মক্ষেত্রে নিজ দায়িত্ব পালনে আন্তরিকতার পরিচয় দিন । দায়িত্ব পালনকে ভয় পাবেন না ।

সৃষ্টির সেবায় পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. সৃষ্টির সেবা বা হক্কুল ইবাদ তৎপরতায় অংশ নিন ।

2. নিয়মিত রক্ত দিন ও রক্তদান কার্যক্রমে অংশ নিন ।

3. কোয়ান্টাম মাটির ব্যাংকে নিয়মিত দান করুন । তিন মাস পর ফাউন্ডেশনে অথবা নিকটবর্তী সেন্টার/শাখা/সেল/প্রি-সেলে জমা দিয়ে নতুন ব্যাংক সংগ্রহ করুন ।

4. যাকাতকে খয়রাত হিসেবে না দিয়ে সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে আদায়ের জন্যে কোয়ান্টাম যাকাত ফান্ডে জমা দিন ।

5. আপনার জমাকৃত মুষ্টিচাল ও পুরানো কাপড় নিয়মিত ফাউন্ডেশনে জমা দেয়ার অভ্যাস করুন ।

6. শিশুকানন ফান্ড, চিকিৎসাসেবা ফান্ড, ফাতেহা ফান্ডসহ ফাউন্ডেশনের সকল সেবা কার্যক্রমে সাধ্যমতো অংশ নিন ।

7. সেন্টার/শাখা/সেল/প্রি-সেলের হক্কুল ইবাদ কার্যক্রমে এসোসিয়েটদের সম্পৃক্ত করুন ।

বন্ধুত্বে পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক থাকুন । চিন্তা, মত ও লক্ষ্যে মিল রয়েছে এমন কারো সাথেই বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন । সৎসঙ্ঘে নিবেদিত সদস্যদের বন্ধু হিসেবে অগ্রাধিকার দিন ।

2. ওয়াদা ও আমানতদারি রক্ষা করুন ।

3. প্রতিদানের আশা না করেই সাধ্যমতো সহযোগিতা করুন ।

4. অন্যের প্ররোচনায় সিদ্ধান্ত নেবেন না, সম্পর্কচ্ছেদ করবেন না ।

5. ঈর্ষান্বিত হবেন না ।

6. ভুল বোঝাবুঝি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলুন ।

7. কী পেলেন তা না ভেবে কী দিতে পারেন তা নিয়ে ভাবুন ।

8. বোকা ও খারাপ মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করা থেকে বিরত থাকুন । (খারাপ বন্ধু সবসময় সর্বনাশের কারণ হয়) ক্ষতিকর বন্ধুদের এড়িয়ে চলুন ।

9. অতিরিক্ত বন্ধুবাৎসল্য দেখাতে গিয়ে নিজের জীবনের লক্ষ্যকে বিসর্জন দেবেন না ।

খাবারদাবার পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. পরিমিত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন ।

2. প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারকে প্রাধান্য দিন ।

3. পরিবারে শাক-সব্জি, ফলমূল, সবুজ সালাদ, স্পিরুলিনা ও মাশরুম খেতে অভ্যস্ত হোন ।

4. প্রতিবেলায় তিন/চার আইটেমের মধ্যে (মাছ অথবা গোশত, সব্জি ও ডাল) রান্না সীমিত রাখুন ।

5. সপ্তাহে একদিন পরিবারের সবাইকে নিয়ে সব্জিখিচুড়ি খান ।

6. সকালে তৃপ্তির সাথে নাশতা, দুপুরে পরিমিত আহার ও রাতে হালকা খাবার গ্রহণ করুন ।

7. ফাস্ট ফুড, রেস্টুরেন্টের খাবার যত কম খাওয়া যায় তত ভালো । কৃত্রিম ও কোমল পানীয় এবং দুধ চা পুরোপুরি বর্জন করুন ।

8. প্রার্থনা করে খাবার শুরু করার অভ্যাস গড়ে তুলুন ।

মেহমানদারি পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. মেহমানদারিতে বাহুল্য, অপচয় ও বাড়াবাড়ি বর্জন করুন ।

2. সদ্ব্যবহার, সদালাপ ও আন্তরিক পরিমিত পরিবেশনার রেওয়াজ গড়ে তুলুন ।

3. মেহমানদের সঙ্গে সম্ভব হলে ও পরিবেশ অনুকুল থাকলে সৎসঙ্ঘের কার্যক্রম ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করুন ।

আপ্যায়ন পুরুষ ও নারী উভয়ের করণীয়

1. লেবুর শরবত/কচি ডাব/লাল চা/গ্রিন টি

2. মুড়ি/চিড়াভাজা/সেমাই/পিঠা

3. সব্জিখিচুড়ি/বিরিয়ানি/মোরগপোলাও/ইলিশপোলাও

4. ফল/ফিরনি/পুডিং

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here