ঋতু অনুযায়ী সাজ কিভাবে পরলে আকর্ষণীয় দেখায়: আমরা অনেকেই কোন সময় কী সাজ হওয়া উচিত তা জানি না বা সেভাবে সাজিও না।
ঋতু অনুযায়ী সাজ কিভাবে পরলে আকর্ষণীয় দেখায়
কথায় বলে, সব সাজ সব জায়গায় মানায় না আর সব কথা সব জায়গায় বলা যায় না। তাই আমাদের জানা উচিত কোন ঋতুতে কী রকম সাজ হওয়া ভালো। ঋতুর সাথে খাপ খাইয়ে আপনার সাজ হলে সেটা আপনার সুরুচির প্রকাশ পাবে । আমাদের দেশ গ্রীষ্মপ্রধান দেশ। তাই প্রথমেই গ্রীষ্ম ঋতু দিয়ে শুরু করা যাক।
গ্রীষ্মের সাজ
গ্রীষ্মকালে আমরা প্রচণ্ড ঘেমে থাকি। তাই শরীর অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে । গরমের দিনে এমনিতেই আপনি অস্বস্তিবোধ করেন । আর এসময় যদি রং চটচটে মেক-আপ করতে যান তাহলে নিজের কাছে তো অস্বস্তি লাগবেই, অন্যের দৃষ্টিতেও সেটা রুচিহীনতার পরিচয় বহন করবে।
কারো কাছে মনে হতে পারে রং মেখে সঙ সেজেছেন। তাই গ্রীষ্মকালে দিনের বেলায় মেক-আপ করবেন হালকা, যা দেখতে লাগে স্বাভাবিকের মতো। তবে রাতের অনুষ্ঠানে বিয়ে বাড়িতে কিছুটা ভারী সাজ করতে পারেন।
আরো পড়ুন- ৭ দিনে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
মেক-আপের শুরুতে এক টুকরো তুলোতে কয়েক ফোঁটা এস্ট্রিনজেন্ট লোশন নিয়ে মুখমণ্ডল, গলা, ঘাড়- এসব জায়গায় লাগাবেন । তবে চোখের চারপাশ বাদ দিয়ে, কারণ গরমের দিনে ঘাম বেশি হয়। এটি লাগানোর কিছু পরে মুখের মেক-আপ করতে পারেন । ফাউন্ডেশনের বদলে বেইজ হিসেবে ভ্যানিশিং ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। তবে প্রথমে আপনাকে ময়েশ্চারাইজিং লোশন মুখমণ্ডলে বিশেষ করে দুচোখের পাশে লাগাতে হবে।
এরপর ধারাবাহিকভাবে সব জিনিস দিয়ে হালকাভাবে সেজে নিয়ে আবারও এস্ট্রিনজেন্ট লোশন খুব সতর্কভাবে মেক-আপের ওপর আলতোভাবে চেপে লাগান । জোরে ঘষা লাগাবেন না । তাহলে মেক-আপ উঠে যেতে পারে। এভাবে মেক-আপের আগে ও পরে এস্ট্রিনজেন্ট লোশন ব্যবহার করলে দুই/তিন ঘণ্টা মেক-আপ ঠিক থাকবে।
বি.দ্র. : লিপস্টিক এবং আইশ্যাডো অবশ্যই গরমের দিনে হালকা হতে হবে । সুগন্ধি বা পারফিউম হবে হালকা মিষ্টি গন্ধের।
বর্ষার সাজ
গ্রীষ্মের পরেই আমাদের দেশে শুরু হয় বর্ষা। কখনো কখনো আট/১০ দিন পর্যন্ত একনাগাড়ে বৃষ্টি হয়। এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে। আর আর্দ্রতা বেশি থাকার ফলে ময়েশ্চারাইজিং লোশন কম পরিমাণে ব্যবহার করলেও চলবে।
বর্ষা ঋতুতে গ্রীষ্মের মতো রৌদ্র তাপ না থাকলেও ভ্যাপসা গরম বোধ হবে মাঝে মাঝে। তাই এসময় হালকা সাজ হবে রুচির পরিচয়। এসময় ফাউন্ডেশন হিসেবে কমপ্যাক্ট মেক-আপ বা প্যানকেক ব্যবহার করতে পারেন । এতে সামান্য কারণে আপনার মুখ ভিজে গেলেও মেক-আপ উঠে যাবার ভয় নেই।
এসময় কাজলের পরিবর্তে আই লাইনার এবং ওয়াটার প্রুফ মাসকারা ব্যবহার করবেন। লিপস্টিক হালকা রঙের ব্যবহার করবেন। তবে দিনটি যদি মেঘে ঢেকে থাকে, অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়, তাহলে গাঢ় লিপস্টিক সেদিন ব্যবহার করতে পারেন।
শীতের সাজ
গ্রীষ্মপ্রধান দেশের মানুষের জন্যে শীত ঋতু একটা আনন্দের সময় । এসময় বাজারে আসে শীতের হরেক রকম সব্জি। তা খেতে যেমন সুস্বাদু ও রুচিকর তেমনি রূপচর্চায়ও এগুলোর ব্যবহার হয়ে ওঠে আনন্দের। শরীরে পুষ্টির জন্যেও পাওয়া যায় প্রচুর ভিটামিনযুক্ত খাবার। আর সাজের সুযোগও চমৎকার। শীতকালে শরীর বেশি ঘামে না বলে সাজগোজ স্থায়ী থাকে বেশিক্ষণ। তৈলাক্ত ত্বক যাদের, তাদের জন্যে সাজগোজ হয় মনের মতো। কারণ এসময় মুখে তেলতেলে ভাব হয় অতি সামান্য।
এসময় এ ধরনের ত্বকের মানুষের সাজ হয়ে ওঠে কমনীয়। ভারী মেক-আপ যারা ভালবাসেন এখন তাদের সুসময়। প্রসাধনীর সব কিছু এসময় ব্যবহার করা যায়। প্রথমে ময়েশ্চারাইজিং লোশন মুখমণ্ডলে বিশেষ করে দুচোখের পাশে সুন্দর করে লাগান। শীতকালে গাঢ় রঙের লিপস্টিক, লিপগ্লস ব্যবহার করতে পারেন। হাত-পায়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগাতে ভুলবেন না। তা না হলে হাতের ত্বক খসখসে ধুলো লাগার মতো মনে হতে পারে।
বসন্তের সাজ
বসন্তকে বলা হয় ঋতুরাজ। এর স্থায়িত্ব খুব কম। বসন্ত ঋতুতে মানুষের মনে স্বাভাবিকভাবেই জাগে আনন্দের শিহরণ। এসময়টাই এমন যে, খুব গরম নয় আবার খুব শীতও নয়। তাই ত্বক হয়ে ওঠে সতেজ, উজ্জ্বল। এসময় সাজগোজ যেভাবেই করুন না কেন দেখতে লাগবে সুন্দর।
তবে এসময় মধ্যম ধরনের সাজগোজই মানায় বেশি। না বেশি গাঢ়, না বেশি হালকা। প্রকৃতি আর আবহাওয়ার কারণেই একটা প্রফুল্ল স্নিগ্ধ ভাব আসে।