পায়ের বিভিন্ন সমস্যা কি কি হতে পারে দেখুন

পায়ের বিভিন্ন সমস্যা কি কি হতে পারে দেখুন
পায়ের বিভিন্ন সমস্যা কি কি হতে পারে দেখুন

পায়ের বিভিন্ন সমস্যা

পায়ের বিভিন্ন সমস্যা: আজ আমরা এখানে পায়ের বিভিন্ন সমস্যা কি কি হতে পারে সেই সব কিছু নিয়ে জানবো। পায়ের যেকোনো অসুবিধায় বা অসুখে আপনার পায়ে ক্লান্তিবোধ জাগতে পারে। সেই সব কারণ গুলি নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো

ক্লান্ত পা

পায়ের যেকোনো অসুবিধায় বা অসুখে আপনার পায়ে ক্লান্তিবোধ জাগতে পারে । এ ক্ষেত্রে আপনি পা দুটোকে কিছুটা উঁচু স্থানে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রাখুন । প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ১০ মিনিট পা হালকা ম্যাসাজ করুন । আপনি যদি নিয়মিত বজ্রাসনে ১০/১৫ মিনিট বসেন এবং প্রতিদিন একঘণ্টা হাঁটেন তাহলে এগুলোর প্রয়োজন হবে না ।

পা ফাটা

শীতের সময় অনেকেরই পা ফাটে । এছাড়া অনেকের আবার ১২ মাসই পা ফাটা থাকে । ফাটা পা দেখতে কুৎসিত মনে হয় । যাদের শীতে পা ফাটে তারা শীত শুরু হওয়ার আগেই পায়ের যত্ন শুরু করবেন । কুসুম গরম জলেতে বেশি করে লবণ ফেলে তার মধ্যে পা ১০/১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন ।

এরপর পা ঘষে ঘষে ফাটা জায়গা পরিষ্কার করে ভালো ভাবে তোয়ালে দিয়ে মুছে শুকিয়ে নিন । এরপর কোনো লোশন কিংবা গ্লিসারিনের সাথে সমপরিমাণ গোলাপ জল কিংবা নরমাল জল মিশিয়ে প্রতিদিন রাতে পায়ে ম্যাসাজ করবেন ।
খাবারে প্রতিদিন ভিটামিন- এ, ভিটামিন- বি, ভিটামিন- সি রাখবেন । শীতের সময় প্রচুর কাঁচা গাজর খাবেন । মনে রাখবেন ত্বকের পেলবতার জন্যে ‘ভিটামিন- এ’ -এর প্রয়োজন । এছাড়া ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খাবেন । কচু শাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম রয়েছে । আগে থেকেই নিয়মিত পায়ের যত্ন নিলে পা ফাটবে না ।

পায়ের ফোসকা

অনেক সময় নতুন জুতোর কারণে পায়ে ফোসকা পড়ে । এ ফোসকা বড় না হলে একটা সুই স্যাভলন জলেতে রেখে ফোসকা ছিদ্র করে দিলে ভেতর থেকে জল বেরিয়ে যাবে ।

তারপর ঐ স্থানে অ্যান্টিসেপটিক স্যাভলন ক্রিম লাগিয়ে নিতে পারেন । যদি ফোসকা পেকে অসুবিধে সৃষ্টি করে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াই ভালো ।

আরো পড়ুন- প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যয় করুন সুস্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য ধরে রাখুন

আঙুল ফোলা

বেশি শীত প্রধান দেশে কিংবা পাহাড়ি অঞ্চলে অনেকের পায়ের আঙুল লাল হয়ে ফুলে ওঠে এবং ভীষণ চুলকাতে থাকে । এ অবস্থায় গরম জলেতে লবণ কিংবা বরিক পাউডার মিশিয়ে পা ১০ মিনিট ডুবিয়ে রেখে পরে শুকনো করে পা মুছে চিকিৎসকের পরামর্শে যেকোনো অ্যান্টিসেপটিক মলম লাগাতে পারেন ।

তবে মনে রাখবেন, এ অবস্থায় যেন পায়ে ঠান্ডা না লাগে । উলের মোজা পরে থাকবেন ।

পায়ের স্ফীতি

নানা কারণে পায়ের স্ফীতি হতে পারে । যেমন গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে কিংবা হৃদরোগেও এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে; যারা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করেন তাদের বেলায়ও হতে পারে অথবা যারা অস্বাভাবিক রকম মোটা তাদেরও হতে পারে ।

এ ক্ষেত্রে স্নানের পর পায়ে লেবুর রস ঘষে ১৫/২০ মিনিট পা দুটোকে শিথিল করে শরীর থেকে কিছুটা উঁচু স্থানে রেখে বিশ্রাম দিতে পারেন । এতে বেশি সুফল পাবেন । পায়ের ব্যায়াম নিয়মিত করলে এসব হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না ।

কুনি নখ

নখ কাটার দোষে অনেক সময় নখের কোণা মাংসের মধ্যে ঢুকে গিয়ে পাশগুলো ফুলে ওঠে ও পেকে যায়- একে বলে কুনি নখ । এটা বেশ বেদনাদায়ক ।

এ ক্ষেত্রে গরম জলেতে বরিক পাউডার মিশিয়ে দিনে চার/পাঁচ বার সেক দিলে ব্যথার উপশম হবে । পরে কোনো অ্যান্টিসেপটিক মলম লাগিয়ে নিতে পারেন । পায়ের কড়া বার বার চাপ বা ঘষা লাগার জন্যে পায়ে কড়ার সৃষ্টি হয় । এ কড়া নখের মতো শক্ত হয়ে ব্যথা করে । তাই জুতো কেনার সময় খেয়াল করে কিনতে হবে যেন তা আরামদায়ক হয় ।

আরো পড়ুন- ঘাড়ে ব্যথার রোগীদের জন্যে বিশেষ পরামর্শ

তা না হলে পরে চাপে চাপে কড়া পড়বে । প্রথম দিকে কর্ন ঝামা বা পিউমিশ স্টোন দিয়ে ঘষে ঘষে কড়া নিবারণ করা যায় কিংবা ধারালো ব্লেড বা ছুরি দিয়ে কেটে ফেলা যায় । এখন বাজারে অনেক লোশন বেরিয়েছে যা কড়ার ওপর লাগালে নরম হয়ে পড়ে যায় । অবশ্য যেকোনো ওষুধ লাগানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত ।

একজিমা

একজিমা দুধরনের হতে পারে- শুষ্ক ও আর্দ্র । একজিমা যে ধরনেরই হোক না কেন এর প্রতিকারও আছে এবং পরিচর্যাও সহজ । একজিমা চুলকায় । সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এর প্রতিকার করুন । তা না করলে একজিমা আপনাকে ভোগাবে ।

ছত্রাক জনিত রোগ

পায়ের আঙুলের ফাঁকে এ ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি । কারণ এ সব জায়গায় ঘাম হয় । যে সব জায়গায় ঘাম হয়, ভেজা থাকে, সে সব জায়গায় ছত্রাকজনিত জীবাণুর আক্রমণ সহজে হয় । এ ক্ষেত্রে পা নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে ধুয়ে শুকনো করে মুছে ফেলতে হবে ।

পা শুষ্ক রাখলেই অনেক ক্ষেত্রে এ রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায় । ছত্রাকের আক্রমণ প্রবল হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত ।

সোরিয়াসিস

সোরিয়াসিসে আক্রান্ত ত্বকের স্থান দেখতে শুষ্ক ও আঁশযুক্ত থাকে । ত্বকের ওপর হালকা গোলাপি রঙের দাগের মতো দেখায় । সূর্যের আলো সোরিয়াসিস দূর করে । যে দেশে সূর্যের আলো নেই সেখানে আল্ট্রা ভায়োলেট ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থা আছে ।

প্রথম অবস্থায় সূর্যের আলো, লোশন বা মলমেই সেরে যায় । তবে এ অবস্থা বেশি দিন চললে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here