Dayanand Saraswati Biography- আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।
Dayanand Saraswati Jivani – স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জীবনী
নাম | দয়ানন্দ সরস্বতী |
জন্ম | ১২ ই ফেব্রুয়ারি ১৮২৪ খ্রিঃ |
আসল নাম | মূলশংকর তিওয়ারি |
জন্মস্থান | গুজরাটের মর্ভি শহরে |
পিতার নাম | কর্ষণজী লাল তিওয়ারি |
মাতার নাম | যশোদা বাই |
কর্মজীবন | ধর্ম গুরু, সমাজ সংস্কারক এবং আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা |
প্রতিষ্ঠাতা | আর্য সমাজ |
মৃত্যু | ৩০ শে অক্টোবর ১৮৮৩ খ্রিঃ |
Dayanand Saraswati Biography in Bengali – স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জীবনী
বর্তমান ভারতবর্ষের সামাজিক সংস্কার ও প্রগতিশীল ধার্মিক চিন্তার অন্যতম পথিকৃৎ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী।
পাশ্চাত্য শিক্ষা ও খ্রিস্টধর্ম প্রচারকদের প্রভাবে পরাধীন ভারতবর্ষের সমাজজীবনে যখন নেমে আসে অবক্ষয় ও অচেতনার ধস, সেই যুগসন্ধিক্ষণে আবির্ভূত হন দয়ানন্দ।
দয়ানন্দ সরস্বতী কে ছিলেন? Who is Dayanand Saraswati?
তৎকালীন হিন্দুসমাজকে সর্বপ্রকার কুসংস্কার থেকে মুক্ত করে বৈদিক সনাতনী পথে পরিচালিত করার জন্য তিনি দেশব্যাপী এক অভূতপূর্ব শুদ্ধি আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন।
দয়ানন্দ সরস্বতী জন্ম: Dayanand Saraswati’s Birthday
১৮২৪ খ্রিঃ গুজরাটের মর্ভি শহরে এক সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন দয়ানন্দ। তাঁর পিতৃদত্ত নাম ছিল মুলশঙ্কর।
দয়ানন্দ সরস্বতী প্রথম জীবন: Dayanand Saraswati’s Early Life
কৌলিক প্রথা অনুসারে মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই তাঁর শাস্ত্রশিক্ষা আরম্ভ হয়। অসাধারণ মেধার অধিকারী ছিলেন তিনি। তাই ছাত্র হিসেবে সর্বক্ষেত্রেই তিনি সাফল্য ও গৌরবের অধিকারী হয়েছেন।
আরও পড়ুন- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জীবনী
তাঁদের পরিবার ছিল শিবের উপাসক। তাই ছেলেবেলা থেকেই তাঁকে শিবের পূজা ও আরাধনার শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মূর্তিপূজা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানাদির অন্তঃসারশূন্যতা উপলব্ধি করতে থাকেন।
দয়ানন্দ সরস্বতী এর পরিবার: Dayanand Saraswati’s family
মাত্র নয় বছর বয়স থেকেই তাঁর পরিবারে এমন কয়েকটি শোকাবহ ঘটনা ঘটতে থাকে যে তার প্রভাবে দয়ানন্দের মন অন্তর্মুখীন হয়ে পড়ে। জীবনের অস্থায়িত্ব ও প্রকৃতির প্রবাহমানতা বিষয়ে তিনি নিঃসংশয় হন।
দয়ানন্দের যখন নয় বছর বয়স তখন তাঁর প্রিয় ঠাকুরদা মারা যান। দু’বছরের ছোট বয়সের স্নেহের বোনটিকে হারান ষোল-সতের বছর বয়সে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মারা যান তাঁর কাকা।
পরিবারের আপনজনের পরপর মৃত্যুর ঘটনার মধ্য দিয়ে জীবনের চরম সত্য তাঁর উপলব্ধি হয়। মৃত্যুই যে মানবজীবনের অনিবার্য পরিণতি এবং প্রতিটি জীবনই মৃত্যুর অধীন এ সম্পর্কে তিনি নিঃসংশয় হন।
তিনি আরও উপলব্ধি করলেন সংসারে স্থায়ী বা নিত্য বলতে কোন পদার্থই নেই। সবকিছুই বিনাশশীল।
বাস্তবের রূঢ় আঘাতে এইভাবে অতি অল্প বয়সেই মূলশঙ্কর জীবন সম্পর্কে নিস্পৃহ হয়ে ওঠেন। সংসারের সকল কিছুর প্রতিই তিনি আকর্ষণ হারাতে থাকেন।
মূলশঙ্করের মানসিকতার এই পরিবর্তন তাঁর বাবা-মায়ের দৃষ্টি এড়ায় না। তাঁরা তাঁকে সংসার বন্ধনে আবদ্ধ করার সঙ্কল্প করেন। তাঁর জন্য একটি যোগ্য পাত্রীর সন্ধান করতে থাকেন।
আরও পড়ুন- মহাকবি কালিদাস জীবনী
বালক মূলশঙ্কর এতে বিচলিত হয়ে পড়েন। ততদিনে তিনি নিজের জীবনের পথ স্থির করে নিয়েছেন।
বাবা-মাকে নানাভাবে বুঝিয়ে এবং জ্ঞানার্জনের আগ্রহ জানিয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে সক্ষম হন । কিন্তু কিছুকাল পরেই তাঁর বাবা তাঁকে বিবাহের জন্য পীড়াপীড়ি করতে থাকেন। ফলে বাধ্য হয়ে গৃহত্যাগ করে তিনি পথে নামলেন।
নানা স্থান পরিভ্রমণের পর লালা ভকত নামে এক সন্ন্যাসীর কাছে সন্ন্যাস দীক্ষা নেন মূলশঙ্কর। দীক্ষান্তে তাঁর নতুন নামকরণ হয় শুদ্ধচৈতন্য। সন্ন্যাসজীবনে তিনি বহু জ্ঞানী সাধু ও পন্ডিত ব্যক্তির সান্নিধ্য লাভ করে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন।
তাঁর জ্ঞান, সন্ন্যাস জীবনের নিষ্ঠা, মানবিকতা এবং চারিত্রিক মাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে পূর্ণনন্দ সরস্বতী নামে এক বিশিষ্ট মহাত্মা তাঁর নতুন নামকরণ করেন স্বামী দয়ানন্দ।
সমাজ সংস্কারে দয়ানন্দ সরস্বতী ভূমিকা – Dayanand Saraswati’s role in social reform
পরবর্তীকালে এই নামেই তিনি দেশের সর্বত্র পরিচিতি লাভ করেন। ভারতীয় ধর্ম ও দর্শনশাস্ত্র বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেছিলেন স্বামী দয়ানন্দ। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল তাঁর যোগসাধনা। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি উপলব্ধি করলেন বেদই হলো হিন্দু ধর্ম-দর্শনের মূল এবং বেদ-নির্দিষ্ট ধর্মীয় পথে মূর্তিপূজার কোন স্থান নেই। কেননা, বেদে এক ঈশ্বর এবং তাঁর অবিনশ্বরতার কথাই বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন- উইলিয়ম শেক্সপীয়র জীবনী
তারপর দয়ানন্দ বেদনির্দিষ্ট একেশ্বরবাদ প্রচার এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন হিন্দু ধর্মের সংস্কারের কাজকেই জীবনের ব্রত রূপে গ্রহণ করেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, ভারতীয় সমাজ-জীবনের ভিত্তিস্বরূপ যে ধর্মীয় আদর্শ তার সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই মানুষ নানাপ্রকার কুসংস্কারের কবলিত হয়েছে। আর মানুষের এই অজ্ঞতা দূর করতে হলে তাদের কাছে তুলে ধরতে হবে ধর্মের স্বরূপ।
এই উপলব্ধির পরবর্তী পর্যায়েই আরম্ভ হল তাঁর পরিব্রাজক জীবন। ভারতের নানা প্রান্তে পরিভ্রমণকালে বৃহত্তর ভারতের জনজীবনকে আরও নিবিড়ভাবে জানার সুযোগ পেলেন তিনি।
এইসময় ভারতের ছোটবড় প্রায় প্রতিটি শহরেই উপস্থিত হয়ে তিনি প্রকৃত হিন্দুধর্মের স্বরূপটি সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরেন। বেদের একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠা ও প্রচারের উদ্দেশ্যে এইসময় তাঁকে তৎকালীন বিশিষ্ট বহু পন্ডিতকে তর্কযুদ্ধে পরাস্ত করতে হয়েছিল।
পরিব্রাজনকালে কলকাতায়ও এসেছিলেন দয়ানন্দ ব্রাহ্মসমাজের মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করে তিনি খুবই আনন্দিত হন।
দয়ানন্দ সরস্বতী ও আর্য সমাজ
ব্রাহ্মধর্মের আদর্শ ছিল বেদনির্দিষ্ট একেশ্বরবাদ এবং ব্রাহ্মরা মূর্তিপূজা স্বীকার করতেন না। আদর্শের অভিন্নতা হেতু দয়ানন্দ ব্রাহ্মসমাজ সম্পর্কে খুবই আগ্রহান্বিত বোধ করেন এবং ভারতবর্ষের সমাজ ও ধর্মসংস্কারের কাজ যৌথভাবে করার সঙ্কল্প করেন।
অবশ্য তাঁর এই সঙ্কল্প নানাকারণে বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব হয়নি। অনেকটা ব্রাহ্মসমাজের প্রভাবের ফলেই দয়ানন্দ তাঁর আন্দোলনকে একটি সংহত রূপ দেবার উদ্দেশ্যে ১৮৭৫ খ্রিঃ বর্তমান মুম্বইতে আর্যসমাজ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
বেদভিত্তিক আদর্শ হওয়া সত্ত্বেও একটি আলাদা ধর্মমত হিসেবে ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। কিন্তু আর্যসমাজ ছিল হিন্দু ধর্মেরই একটি সহযোগী সংস্থা।
আর্যসমাজের অন্তর্ভুক্ত লোকদের বলা হত আর্যসমাজী। তাঁরা ছিলেন সম্পূর্ণ বৈদান্তিক।
তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, ভারতবর্ষের সমাজ ও হিন্দুধর্মকে কুসংস্কার মুক্ত করা এবং প্রাচীন ভারতের গৌরবময় ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা।
আরও পড়ুন- বিজ্ঞানী চরক এর জীবনী সমগ্র
স্বামী দয়ানন্দের আর্যসমাজের আদর্শে তৎকালীন সমাজের শীর্ষস্থানীয় নেতা লালা লাজপৎ রায়, বাল গঙ্গাধর তিলক সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। সেইকালে খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের অপপ্রচারের ফলে হিন্দু ধর্মকে নিকৃষ্ট বিবেচনা করে বহু হিন্দু স্বধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করছিলেন।
খ্রিস্টানদের এই অপচেষ্টা রোধ করার জন্য স্বামী দয়ানন্দ নানা যুক্তি ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মাধ্যমে হিন্দুধর্মের উৎকর্ষতা প্রমাণ করেন।
স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর অবদান
ধর্মান্তরিত হিন্দুদের স্বধর্মে ফিরিয়ে আনার জন্য এবং ভিন্নধর্মীকে হিন্দুধর্মের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দয়ানন্দ শুদ্ধিআন্দোলনের সূত্রপাত করেছিলেন। তাঁর এই আন্দোলনের ফলে একদিকে যেমন তিনি হিন্দুসমাজকে নানা কুসংস্কার থেকে মুক্ত করতে পেরেছিলেন তেমনি বহু অহিন্দুকেও ধর্মান্তরিত করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী করেছিলেন।
চিন্তা, আদর্শ ও কর্মসূত্রে দয়ানন্দ ছিলেন রাজা রামমোহন রায়ের সার্থক উত্তরসূরী।
ভারতে বহুপ্রচলিত বর্ণভেদ প্রথা, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ, সতীদাহ প্রথা, মূর্তিপূজা, পুরোহিততন্ত্র প্রভৃতি হিন্দুসমাজের তৎকালীন সকলপ্রকার কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি দৃঢ় ও নির্ভীকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
দয়ানন্দ ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের পূজারী। তিনি বিশ্বাস করতেন সত্যনিষ্ঠাই মানুষের শ্রেষ্ঠ ধর্ম। প্রচার করতেন সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী, মিথ্যা কখনোই জয়লাভ করতে পারে না।
ভারতে নারীমুক্তি আন্দোলনেরও অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন দয়ানন্দ। নারী ও পুরুষের সমান সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে তিনি সচেষ্ট হয়েছিলেন। তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তৎকালে বহু যুবক দেশসেবার ব্রতে আত্মনিয়োগ করেছিলেন।
আরও পড়ুন- বিজ্ঞানী আর্যভট্ট এর জীবনী সমগ্র
ভারতীয় জাতীয়তাবাদের অন্যতম অগ্রগণ্য প্রচারক ছিলেন দয়ানন্দ। এইক্ষেত্রে একমাত্র স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গেই তাঁর তুলনা চলে।
পরাধীন ভারতের অন্ধকারময় অধ্যায়ে আলোর পথিকরূপেই আবির্ভাব হয়েছিল দয়ানন্দের।
তাঁর ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা, ও প্রতিভার দ্যুতি বহুক্ষেত্রে বিচ্ছুরিত হয়ে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছিল।
ভারতবর্ষে আধুনিক শিক্ষা প্রবর্তনের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট অবদান রয়েছে স্বামী দয়ানন্দের। ইংরাজী শিক্ষার সমর্থক ছিলেন তিনি। তেমনি ভারতের অতীত গৌরবের ঐতিহ্যের কথাও সগর্বে প্রচার করতেন।
স্বামী দয়ানন্দ চেয়েছিলেন, আধুনিক ইংরাজি শিক্ষা ও প্রাচীন হিন্দুশাস্ত্রের সমন্বয়ে একটি আদর্শ শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন করতে। এই উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন শহরে তিনি অনেক স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমান সময় পর্যন্ত সেইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের কাজে ব্রতী রয়েছে।
দয়ানন্দের প্রগতিপন্থী চিন্তাভাবনা ও কর্মপ্রচেষ্টা দেশের ধর্মান্ধ গোঁড়া সম্প্রদায়ের কিছু মানুষের স্বার্থহানির কারণ হয়ে উঠেছিল। হিন্দুসমাজের এই রক্ষণশীল স্বার্থান্ধ অংশটি দয়ানন্দের উদার মানবিকতা, অকৃত্রিম জাতীয় হিতৈষণা ও দূরদৃষ্টিকে ভালভাবে নিতে পারেনি।
আরও পড়ুন- কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য এর জীবনী
ফলে সংকীর্ণবাদী একশ্রেণীর মানুষ তাঁর বিরোধী হয়ে ওঠে এবং তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
রামগড় এবং প্রয়াগে দয়ানন্দের প্রাণনাশের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সৌভাগ্যবশতঃ উভয় ক্ষেত্রেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যায়।
পরিব্রাজনকালে বৈদিক ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে দয়ানন্দ রাজস্থানের যোধপুর, উদয়পুর, প্রভৃতি রাজ্যের মহারাণার সাক্ষাৎ সংস্পর্শে আসেন।
সকল রাজ্যের মহারাণাই দয়ানন্দর পান্ডিত্য ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হন এবং তাঁর বৈদিকধর্ম প্রচার এবং পারোপকারের আদর্শ রূপায়নের জন্য মুক্তহস্তে সাহায্যের সঙ্কল্প গ্রহণ করেন। অবিলম্বেই উদয়পুরের রাণার তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত হয় পরোপকারিণী সভা।
আরও পড়ুন- মহর্ষি বাল্মীকি জীবনী
এইভাবে দিনে দিনে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে দয়ানন্দের প্রভাব বৃদ্ধি ঘটতে থাকলে স্বার্থান্বেষী রক্ষণশীল পন্থীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। নানাভাবেই তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা চলতে থাকে।
দয়ানন্দ সরস্বতী মৃত্যু: Dayanand Saraswati’s Death
অবশেষে ১৮৮৩ খ্রিঃ খাদ্যে বিষ প্রয়োগের ফলে আজীবন সত্যনিষ্ঠ স্বামী দয়ানন্দের কর্মময় জীবনের অবসান ঘটে।