Dakshinaranjan Mitra Majumder Biography: আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহান ব্যক্তিদের জীবনী সমগ্র। মহান ব্যক্তি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁদের জীবনের ক্ষুদ্রতম অংশগুলি আমাদের জন্য শিক্ষামূলক হতে পারে। বর্তমানে আমরা এই মহান ব্যক্তিদের ভুলতে বসেছি। যাঁরা যুগ যুগ ধরে তাদের কর্ম ও খ্যাতির মধ্য দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প ও সাহিত্যের জগতে এক অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী, চরিত্র দ্বারা দেশ ও জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। সেইসব মহান ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম সাহিত্যের অন্যতম শিশুসাহিত্যিক দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার (Dakshinaranjan Mitra Majumder) -এর সমগ্র জীবনী সম্পর্কে এখানে জানব।
Dakshinaranjan Mitra Majumder Biography In Bengali – দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার জীবনী
নাম | দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার |
জন্ম | ১৫ এপ্রিল, ১৮৭৭ |
জন্মস্থান | ঢাকা জেলার সাভার উপজেলায় |
পিতা | রমদাররঞ্জন মিত্র মজুমদার |
মাতা | কুসুমময়ী দেবী |
পেশা | লেখক |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
দাম্পত্য সঙ্গী | গিরিবালা দেবী |
উল্লেখযোগ্য কাজ | ঠাকুমার ঝুলি |
ধরন | লোকসাহিত্য, শিশুসাহিত্য |
মৃত্যু | ৩০ শে মার্চ ১৯৫৬ |
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর জন্ম স্থান ও পিতামাতা: Birth Place And Parents Of Dakshinaranjan Mitra Majumder
বাংলা শিশুসাহিত্যে রূপকথার যাদুকর আখ্যায় ভূষিত দক্ষিণারঞ্জনের জন্ম ঢাকার উলাইল গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তাঁর পিতার নাম রমদারঞ্জন মিত্র মজুমদার। গ্রামের স্কুলে পড়া শেষ করে তিনি পিতার কর্মস্থল মুর্শিদাবাদে চলে আসেন।
এখানে বাসকালেই তিনি প্রদীপ ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখা আরম্ভ করেন। পরে বন্ধুদের সঙ্গে মিলে সুধা নামে একটি পত্রিকাও প্রকাশ করেন।
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর প্রথম জীবন: Dakshinaranjan Mitra Majumder’s Early Life
মুর্শিদাবাদে পাঁচ বছর থাকার পর দক্ষিণারঞ্জণ ময়মনসিংহে চলে আসেন। এখানে ছিল তাঁর পিসীমার বাড়ি। তাঁর বিশাল জমিদারি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পড়ে দক্ষিণারঞ্জনের ওপরে।
জমিদারি কাজের সুযোগেই পল্লীপ্রকৃতি ও গ্রামের সাধারণ মানুষের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যলাভের সুযোগ ঘটে।
বাংলার পল্লীগ্রামে প্রচলিত লোক-কাহিনী, ছড়া গান ইত্যাদির সহজ সরল কথা ও সুরের প্রতি তাঁর আগ্রহ জন্মে। তিনি লক্ষ করেন মানুষের মুখে মুখে ফেরে যে সব গল্প-কথা তার আকর্ষণ এমনই যে প্রতি সন্ধ্যায় ঘরে ঘরে বয়োবৃদ্ধদের ঘিরে বসে আসর, সেখানে মন্ত্রমুগ্ধের মত সকলে উপভোগ করে রূপকাহিনীগুলি। এসব লোক-সাহিত্যের কোন লিখিত রূপ নেই।
মানুষের সঙ্গে সঙ্গে কালের স্রোতে সেসব কাহিনীও হারিয়ে যায়।
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর কর্ম জীবন: Dakshinaranjan Mitra Majumder’s Work Life
দক্ষিণারঞ্জন বাংলার লুপ্তপ্রায় লোকসাহিত্য সংগ্রহের কাজে উদ্বুদ্ধ হন। দীর্ঘ দশ বছর ধরে ঘুরে ঘুরে তিনি লোকসাহিত্য সংগ্রহ ও গবেষণার কাজ করেন।
তাঁর এই সংগ্রহ চারভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। সেগুলো হল, রূপকথা, গীতিকাব্য, রসকথা ও ব্রতকথা।
এর সবই পূর্ববঙ্গের পল্লী অঞ্চলের লুপ্তপ্রায় কথা-সাহিত্য। দীনেশচন্দ্র সেনের উপদেশে দক্ষিণারঞ্জণ এই কাহিনীগুলিকে স্থায়ী রূপদান করেন বিভিন্ন নামে।
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার এর রচনা: Written by Dakshinaranjan Mitra Majumder
রূপকাহিনীগুলি স্থান পায় ঠাকুরমার ঝুলি গ্রন্থে। গীতিকাহিনী গুলি নিয়ে রচিত হয় ঠাকুরদার ঝুলি, রসকথা স্থান পায় দাদামশায়ের থলে গ্রন্থে এবং প্রচলিত ব্রতকথা নিয়ে লিখিত হয় ঠানদিদির থলে।
সেই প্রথম বাংলার লোক কাহিনীগুলি পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয় এবং সর্বস্তরের মানুষের কাছে বিপুলভাবে সমাদর লাভ করে।
দক্ষিণারঞ্জণ ছোটদের জন্য আরও যেসব বই লিখে বাংলার শিশুসাহিত্য ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চারু ও হারু, ফার্স্টবয়, লাস্টবয়, বাংলার সোনার ছেলে, সবুজ লেখা, আমার দেশ প্রভৃতি।
দক্ষিণারঞ্জন কর্মসূত্রে বঙ্গীয় বিজ্ঞান-পরিষদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।
তিনি এই সংস্থার সহকারী সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেন এবং মুখপত্র পথ -এর সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তী কালে পরিষদের বৈজ্ঞানিক পরিভাষা সমিতির সভাপতি রূপে বাংলায় বিজ্ঞানের বহু পরিভাষা রচনা করেন।
দক্ষিণারঞ্জন স্মরণীয় হয়ে আছেন তাঁর শিশু সাহিত্যের অবদানের জন্য। বিশেষ করে ঠাকুরমার ঝুলি, ঠাকুরদার থলে প্রভৃতি গ্রন্থগুলির জন্য। রূপ-কাহিনীগুলিকে তিনি এমন মনোরম সুরেলা ভাষায় ব্যক্ত করেছেন যে তার আকর্ষণ অপ্রতিরোধ্য।
পল্লীগ্রামে প্রচলিত এমন অনেক শব্দ ও কথা তিনি হুবহু প্রয়োগ করে তাঁর লেখনীকে আরও সমৃদ্ধ ও মনোগ্রাহী করে তুলেছেন।
আরও পড়ুন-