ভুজঙ্গাসন করার পদ্ধতি উপকারিতা: যোগা (Yoga) হল প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এক বিশেষ ধরনের শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা। শরীর, মন সুস্থ ও সবল রাখতে এবং রোগ মুক্তিতে যোগাসনের ভূমিকা আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। এই প্রথা সারা বিশ্বে আজও প্রচলিত আছে। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ভুজঙ্গাসন করার পদ্ধতি উপকারিতা। ভুজঙ্গাসন করার পদ্ধতি উপকারিতা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হল।
ভুজঙ্গাসন করার পদ্ধতি উপকারিতা
ভুজঙ্গাসন করার পদ্ধতি
প্রথমে উপুড় হয়ে দুই পা জোড় করে সোজা রেখে মাটিতে শুয়ে পড়ুন। মাথাটা বামে অথবা ডানে- যেদিকে ইচ্ছে কাত করে রাখুন। হাত দুটো শরীরের দুপাশে ও হাতের পাতা মাটিতে লেগে থাকবে। এবার (১ নং ছবির মতো)
হাত দুটো টেনে নিয়ে এসে দুবাহু বরাবর উপুড় করে রাখুন। হাতের ওপর ভর করে মাথা ওপরে তুলুন। বুক মাটি থেকে ওপরে উঠবে। কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পা জোড় অবস্থায় সোজা থাকবে। নাভি মেঝেতে লেগে থাকবে। দম থাকবে স্বাভাবিক। (২ নং ছবির মতো)
এভাবে পূর্ণ ভঙ্গিমায় এসে ১০/১৫ সেকেন্ড অবস্থান করুন। তিন থেকে পাঁচ বার করতে পারেন। প্রয়োজনে শবাসনে ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিয়ে করতে পারেন।
এবার (৩ নং ছবির মতো) হাতের ওপর ভর করে বুক-পেট মাথা পেছন দিকে এলিয়ে দিয়ে পা দুটো হাঁটু ভেঙে মাথার তালুর সাথে লাগিয়ে দিন। নাভি ওপরে থাকবে। এ অবস্থানে ১০/১৫ সেকেন্ড থাকতে পারেন। এভাবে তিন থেকে পাঁচ বার করতে পারেন। ৩ নং ছবির আসনটির নাম পূর্ণ ভুজঙ্গাসন।
ভুজঙ্গ অর্থ সাপ। সাপের ফনার মতো দেখতে লাগে বলে আসনটির নাম ভুজঙ্গাসন। প্রথম দিকে পা জোড় অবস্থায় আসনটি না করতে পারলে পা দুটো সুবিধা মতো ফাঁক করে অভ্যাস করতে পারেন। ধীরে ধীরে শরীর নমনীয় হলে সঠিক ভঙ্গিমায় আসনটি করতে পারবেন। জোর করে একবারে করতে যাবেন না।
আরও পড়ুন- জানুশিরাসন করার পদ্ধতি উপকারিতা
ভুজঙ্গাসন করার উপকারিতা
1. এ আসনটি নিয়মিত করলে ব্যাকপেইন, স্পন্ডিলাইটিস, স্লিপড ডিস্কজাতীয় রোগ হতে পারে না।
2. সব ধরনের স্ত্রীরোগের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে । তাই প্রতিদিন এ আসনটি অভ্যাস করা উচিত।
3. যে সব ছেলে/মেয়ের বয়স অনুযায়ী বুকের গড়ন সরু বা অপরিণত তাদের এ আসনটি করা উচিত। নিয়মিত অভ্যাসে বুক সুগঠিত হয়।
4. আসনটিতে ঘাড় গলা মুখ বুক পিঠ কোমর ও মেরুদণ্ডের ওপরে চাপ পড়ায় ঐ অঞ্চলের স্নায়ুতন্ত্র ও পেশি সতেজ ও সক্রিয় থাকে। পিঠের মাংসপেশিকে মজবুত ও বেশি কর্মক্ষম করে।
5. মেরুদণ্ডের হাড় নমনীয় থাকে।
আরও পড়ুন- উষ্ট্রাসন করার পদ্ধতি উপকারিতা
6. টনসিলাইটিস থেকে মুক্তির জন্যে এবং যারা ঘন ঘন ঠান্ডায় ভোগেন তাদের জন্যে উপকারী।
7. এ হাই ব্লাডপ্রেশার রোগীদের জন্যে খুবই উপকারী। মানসিক উদ্বেগ ও উত্তেজনার ফলে আমাদের শরীরের রক্তে এড্রিনালিন বেড়ে গিয়ে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। এ আসন নিয়মিত চর্চা এড্রিনাল গ্রন্থিকে ত্রুটিমুক্ত ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
8. অর্ধ ভুজঙ্গাসনেও পূর্ণ ভুজঙ্গাসনের মতো ফল পাওয়া যায়।
9. নিয়মিত এ আসন করলে হজমশক্তি বাড়ে। যকৃৎ ও প্লীহা সুস্থ থাকে।